আজ নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী

বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১২ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিন শতাধিক গ্রন্থের এই স্রষ্টা আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যে এক নতুন ধারার প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত।

১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্ম নেন হুমায়ূন আহমেদ। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা আয়েশা ফয়েজ গৃহিণী। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে হুমায়ূন ছিলেন সবার বড়। তার দুই ভাই জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীবও দেশের খ্যাতিমান সাহিত্যিক ও শিল্পী।

সাহিত্যজীবনের শুরুটা কবিতা দিয়ে হলেও উপন্যাস, নাটক, শিশুসাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, চিত্রনাট্য ও চলচ্চিত্র পরিচালনা—সবক্ষেত্রেই তিনি অনন্য স্বাক্ষর রেখেছেন। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে দিয়েই তিনি রাতারাতি খ্যাতি অর্জন করেন। এরপর হিমু, মিসির আলী, শুভ্র প্রভৃতি চরিত্র সৃষ্টি করে তিনি তরুণ-তরুণীদের হৃদয়ে স্থায়ী আসন গড়ে নেন।

আধুনিক বাংলা কথাসাহিত্যে সংলাপনির্ভর নতুন ধারার সূচনা করেছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। বাংলা ভাষায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনির পথিকৃত হিসেবেও তিনি বিশেষভাবে পরিচিত। তার বইয়ের অনেকগুলো পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং দেশের স্কুল-কলেজের পাঠ্যসূচিতে জায়গা করে নিয়েছে।

চলচ্চিত্র জগতে আগুনের পরশমণি, শ্যামল ছায়া, শ্রাবণ মেঘের দিন, দুই দুয়ারী, চন্দ্রকথা, নয় নম্বর বিপদ সংকেত, ঘেটুপুত্র কমলাসহ অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি।

দীর্ঘ সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে হুমায়ূন আহমেদ একুশে পদক (১৯৯৪), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮১), জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ (১৯৯৩ ও ১৯৯৪) বহু সম্মাননা অর্জন করেছেন।

২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তার শরীরে ক্যানসার ধরা পড়ে। চিকিৎসার জন্য নিউইয়র্কে গেলেও শেষ পর্যন্ত আর ফেরা হয়নি। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই রাতে তিনি পৃথিবী ছেড়ে যান। ২৩ জুলাই তার মরদেহ দেশে আনা হয় এবং ২৪ জুলাই গাজীপুরের নুহাশ পল্লীর লিচুতলায় তাকে শায়িত করা হয়।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ

তার সৃষ্টিতে বেঁচে থাকবেন তিনি আরো বহু প্রজন্মের ভালোবাসায়।