ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত সপ্তাহে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ২০ জুলাই সকালে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে নিয়ে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
তার ঘনিষ্ঠজনরা এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে তিনি নিউমোনিয়া ও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে আইসিইউ, পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরী মারা গেছেন
হামিদুজ্জামান খান ১৯৪৬ সালের ১৬ মার্চ কিশোরগঞ্জের সহশ্রাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগে অধ্যাপনা করেন। ফর্ম, বিষয়ভিত্তিক ও নিরীক্ষাধর্মী ভাস্কর্যের জন্য সুপরিচিত ছিলেন।
১৯৭৬ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণায় তিনি নির্মাণ করেন ‘একাত্তর স্মরণে’। ১৯৮৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে অলিম্পিক ভাস্কর্য পার্কে ‘স্টেপস’ স্থাপন করেন। এরপর আন্তর্জাতিক পরিসরে খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ক্যানভাসে তিনি জলরং ও অ্যাক্রেলিকে বিমূর্ত ধারায় ফুটিয়ে তোলেন নিসর্গ ও মানবশরীর।
সিলেট ক্যান্টনমেন্টে ‘হামলা’, বঙ্গভবনে ‘পাখি পরিবার’, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংশপ্তক’ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে ‘শান্তির পায়রা’ তার উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ‘হামিদুজ্জামান খান ১৯৬৪-২০১৭’ শিরোনামে রেট্রোস্পেকটিভ প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
তিনি ২০০৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ২০২৩ সালে বাংলা একাডেমি তাকে ফেলোশিপ দেয়। দেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ গাজীপুরের কড্ডায় তার ভাস্কর্য সংগ্রহ দিয়ে বড় এক ভাস্কর্য বাগান নির্মাণ করে। কর্মজীবনে তার শিল্পকর্ম বাংলাদেশ, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়া, বুলগেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রদর্শিত এবং স্থাপিত হয়েছে।
ধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ