চট্টগ্রাম বে টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নয়নসহ ১৪ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ২৪ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৩ হাজার ১ কোটি টাকা, বৈদেশিক সহায়তা থেকে ১৬ হাজার ৭১৯ কোটি টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ৪ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ব্রিফিং করেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, বে টার্মিনালের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ১৩ হাজার ৫২৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ৯ হাজার ৩৩৩ কোটি এবং সরকারি তহবিল থেকে খরচ হবে ৪ হাজার ১৯২ কোটি টাকা।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বন্দর আসলে সমুদ্রবন্দর নয়, এটি নদীবন্দর। কাজেই আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সমুদ্রবন্দর দরকার। এজন্য বে টার্মিনালটির অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এর একটি আজ অনুমোদন পেল। আরও একটি প্রকল্প নেওয়া হবে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনার শিপের (পিপিপি) মাধ্যমে। সবমিলিয়ে এখানে চারটি টার্মিনাল হবে এবং এটি মেগা প্রকল্প হবে। প্রকল্পটি যাতে দ্রুত শেষ হয় সেজন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, যেকোনো বিদেশি বড় ঋণ নিতে হলে ছোট পরামর্শকের বোঝা ঘাড়ে নিতেই হবে। সেটি না হলে তারা ঋণ দিতে চায় না। বাধ্য হয়েই বিদেশি ঋণের প্রকল্পে পরামর্শক নিতে হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে রাজনৈতিকভাবে যুক্ত করায় এর প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ প্রকৃত ভাতা পাওয়ার যোগ্য নয়। উপকারভোগী বাছাইয়ে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছিল।
ব্রিফিংয়ে পরিকল্পনা সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুনসহ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো– জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মাল্টি-সেক্টর প্রকল্প, চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্প (১ম পর্যায়) এবং চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন। এ ছাড়া গ্রিন রেলওয়ে পরিবহন প্রস্তুতিমূলক কারিগরি সহায়তা, তিতাস ও বাখরাবাদ ফিল্ডে দুটি গভীর অনুসন্ধান কূপ খনন, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের খনন সক্ষমতা বৃদ্ধি ও শক্তিশালীকরণ।
আরও আছে– বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণ যন্ত্রপাতি উন্নয়ন প্রকল্প, বাংলাদেশ টেকসই পুনরুদ্ধার, জরুরি প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া প্রকল্প (B-STRONG) (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর – DAE, বিএডিসি), বাংলাদেশ টেকসই পুনরুদ্ধার, জরুরি প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া প্রকল্প (B-STRONG) (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর – LGED) এবং বাংলাদেশ টেকসই পুনরুদ্ধার, জরুরি প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া প্রকল্প (B-STRONG) (বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড – BWDB)।
অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশে কৃষি খাত রূপান্তরের টেকসই ও সহনশীল বিনিয়োগে কারিগরি সহায়তা কর্মসূচি, চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্প (১ম পর্যায়) (১ম সংশোধিত), সবার জন্য বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শহর প্রকল্প (LICA), চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ উন্নয়ন প্রকল্প, উন্নত সহনশীলতা, অন্তর্ভুক্তি ও লক্ষ্যভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা জোরদারকরণ প্রকল্প।