থাইল্যান্ডের সঙ্গে চলমান সংঘর্ষের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে কম্বোডিয়া। দেশ দুইটি বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) থেকে সীমান্তে সংঘর্ষে লিপ্ত রয়েছে। এতে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছেন এবং উভয় দেশে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সংঘর্ষ আরও বিস্তৃত হওয়ার আশঙ্কায় কম্বোডিয়া “অবিলম্বে” যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রদূত ছেয়া কেও এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা শর্তহীন যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছি এবং বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধান কামনা করছি।”
আরও পড়ুনঃ গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি ইসরায়েল
তবে থাইল্যান্ড এখনও কম্বোডিয়ার প্রস্তাবের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেনি। এর আগে কম্বোডিয়ার সীমান্তবর্তী আট জেলায় সামরিক আইন জারি করে দেশটি। থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই শুক্রবার সতর্ক করে বলেন, সংঘর্ষ “যুদ্ধের দিকেও গড়াতে পারে”। তিনি জানান, বর্তমানে সংঘর্ষ ১২টি সীমান্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং এতে ভারী অস্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে।
থাইল্যান্ডের দাবি, কম্বোডিয়ার বাহিনী বেসামরিক এলাকায় রকেট ছুড়েছে এবং আশেপাশের সব গ্রাম খালি করে ফেলা হয়েছে। অপরদিকে, কম্বোডিয়ার অভিযোগ, থাই সেনারা সংঘর্ষে ক্লাস্টার বোমা ব্যবহার করেছে, যা অধিকাংশ দেশে নিষিদ্ধ এবং বেসামরিক মানুষের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। থাইল্যান্ড এই অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি।
এদিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শুক্রবার (২৫ জুলাই) বলেছেন যে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়া যুদ্ধবিরতিতে “সম্মত” হয়েছে, কিন্তু সীমান্ত থেকে তাদের সৈন্য প্রত্যাহারের জন্য সময় প্রয়োজন।
ব্যাংকক বলেছে যে তারা আনোয়ারের প্রস্তাবের সাথে “নীতিগতভাবে সম্পূর্ণ একমত”, অন্যদিকে নমপেন বলেছে যে তারা যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে কিন্তু থাইল্যান্ডকে তা প্রত্যাহারের জন্য দায়ী করেছে।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফেসবুকে বলেছেন, “থাই পক্ষ যুদ্ধবিরতির জন্য তার প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে, কিন্তু এটি দুঃখজনক যে মাত্র এক ঘণ্টা পরে, থাই পক্ষ আমাদের জানিয়েছে যে তারা যুদ্ধবিরতির বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে।”
প্রসঙ্গত, থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার মধ্যে সীমান্ত বিরোধ বেশ পুরনো হলেও, গত মে মাসে এক কম্বোডিয়ান সেনার নিহত হওয়ার পর উত্তেজনা নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পায় এবং কূটনৈতিক সম্পর্কে অবনতি হয়। বর্তমানে চলমান এই সংঘর্ষ যদি দ্রুত বন্ধ না হয়, তাহলে তা পুরো অঞ্চলে নিরাপত্তা হুমকির জন্ম দিতে পারে এবং বৃহত্তর আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র : বিবিসি
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ