আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার কাজ শুরু ১৭ অক্টোবর

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে সংগঠিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের বিচারিক কার্যক্রম আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুরু হচ্ছে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর)।

মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।

চিফ প্রসিকিউটর জানান, আগামীকাল ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ অপর বিচারপতিদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

এর আগে, গতকাল সোমবার হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হওয়া মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে চেয়ারম্যান করে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ১৪ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এদিকে, গত ৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এছাড়া প্রসিকিউশন টিমের অপর পাচ প্রসিকিউটররা হলেন মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও মো. সাইমুম রেজা তালুকদার।

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের লক্ষ্যে ২০১০ সালে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন টিম বরাবর হত্যা, গণহত্যা, গুম-খুনের অর্ধশত অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মীদের।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেছেন, বিচারক নিয়োগ হওয়ামাত্র ট্রাইব্যুনাল ফাংশনাল (কার্যকর) হবে। ট্রাইব্যুনাল ফাংশনাল হওয়া মাত্র আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, আসামিদের বিদেশ যাওয়া বন্ধ করা, তথ্য-উপাত্ত জব্দ করার জন্য আদেশ চাইব। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য লাগবে। সে ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল থেকে আদেশ আসবে।

২০১০ সালের ২৫ মার্চ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। পরে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ নামে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। তবে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুটিকে একীভূত করে আবার একটি ট্রাইব্যুনাল বহাল রাখা হয়। ফলে একটি ট্রাইব্যুনালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারকার্য চলমান রয়েছে।