গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, এ দেশে নির্বাচন করার অধিকার ছিল না, মুক্ত চিন্তা করার অধিকার ছিল না। সন্ত্রাস, লুটপাট, চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য রাজনীতিকে একটি দুর্বৃত্তায়নে পরিণত করেছিল। আমরা এ অবস্থার পরিত্রাণ ঘটাতে পেরেছি। কিন্তু আমাদের সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে যাতে আওয়ামী লীগের মতো আর কোনো ফ্যাসিবাদ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মাওনা উড়াল সড়কের নিচে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই দেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা বারবার রক্ত দিয়ে সংগ্রাম করেছে, কিন্তু যেই লাউ সেই কদু হয়েছে। ১৯৭১ সালে এই দেশের কৃষক-শ্রমিক-সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, স্বাধীনতা এনেছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে লুটেরা শ্রেণি ও মাফিয়াদের উদ্ভব হয়েছিল। যারা রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সেই সময়ে জিম্মি করেছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল। দেশে নৈরাজ্য কায়েম করেছিল, একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। আবার যখন ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছিল আমরা ভেবেছিলাম তাদের কিছুটা পরিবর্তন হয়েছিল। ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসায় মনে করেছিলাম অতীতের প্রায়শ্চিত্ত করে মনে হয় একটু ভালো হবে। কিন্তু না, উল্টো তারা ফ্যাসিস্ট ব্যবস্থা কায়েম করে দেশকে ধ্বংস করেছে। তাই নতুন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। এর দোসরদের নিষিদ্ধ করতে হবে। নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
নুরুল হক নুর বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে ভারতসহ নানা দেশ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, দেশের ভেতরেও নানা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি সাবের হোসেনকে জামিন দেওয়ার সঙ্গে এর একটি তৎপরতা আছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগকে কোনো ঠাঁই দেওয়া হবে না। এর দোসরদের ঠাঁই দেওয়া হবে না।
বিএনপির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে নুর বলেন বলেন, আপনারা আদালতে জিপি, পিপি, এপিপি, বিচারক নিয়োগে প্রতিযোগিতা করছেন, অথচ গণহত্যাকারীদের আদালতে ঠেকাতে পারছেন না কেন?
বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধু নির্বাচনের জন্য আপনাদের বসানো হয়নি। ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক কাঠামো দিয়ে সংস্কার করে নির্বাচন দেবেন। জন-আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী কাজ করলে দেশের মানুষের সমর্থন পাবেন আর যদি সাবের হোসেন চৌধুরীকে মুক্তি দিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগ, ভুঁইফোড় আওয়ামী লীগ বানাতে চান তাহলে দেশের মানুষ আপনাদের সহযোগিতা করবে না।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষের কষ্ট হচ্ছে জানিয়ে এ নেতা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তাই খাদ্যপণ্যে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার দাবি করেন তিনি।
গণঅধিকার পরিষদের গাজীপুর জেলার আহ্বায়ক পাঠান আজহারের সভাপতিত্বে গণঅধিকার পরিষদের নেতা মনির মোল্লার সঞ্চালনায় পথসভায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।