দায়িত্ব গ্রহণের পর চতুর্থ দফায় সংলাপে বসছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে শনিবার (১৯ অক্টোবর) ফের সংলাপে বসছেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় বিকেল ৩টা থেকে শুরু হবে এ সংলাপ।
সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া দল বা জোটের একাধিক নেতা জানান, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে তাদের আলোচনার মূল কেন্দ্র থাকবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার এবং নির্বাচনী রোডম্যাপ। এ ইস্যুতে তারা সুনির্দিষ্ট সংস্কার প্রস্তাব দেবেন।
এ ছাড়া দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, প্রশাসন থেকে আওয়ামী লীগের দোসরদের সরানো, গণহত্যার বিচার এবং আওয়ামী লীগের আমলে বিরোধী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা-গায়েবি মামলা প্রত্যাহার প্রসঙ্গে তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন।
শনিবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণফোরাম, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় পার্টি-বিজেপি (পার্থ), ১২ দলীয় জোট, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, লেবার পার্টিসহ আরও কয়েকটি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার এটি হবে চতুর্থ দফা সংলাপ।
এর আগে গত ৫ অক্টোবর বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, হেফাজতে ইসলাম, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
এদিকে এখনও সংলাপের আমন্ত্রণ পায়নি জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুর হক চুন্নু বলেন, তারা (জাতীয় পার্টি) এখনো আমন্ত্রণ পাননি। তবে আগামীতে সম্ভাবনা আছে। এদিকে আওয়ামী লীগ ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটের কেউ এ সংলাপে আমন্ত্রণ পাননি বলে জানা গেছে।
গত মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপ চলছে। ইতোমধ্যে (গত ৫ অক্টোবর) কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার আরও কয়েকটি দলের সঙ্গে সংলাপ হবে।
ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। ৮ আগস্ট শপথ নেওয়ার পর কয়েকদিনের মাথায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম সংলাপ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিষয়ে সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠনের কথা জানান।
এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলে কমিশনগুলো কাজ শুরু করে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য, গণমাধ্যম, নারী ও শ্রমিক অধিকার নামে আরো চারটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে সরকার।