সন্তানদের বড় করা, তাদের লালন-পালন (পেরেন্টিং) সত্যিই একটি কঠিন কাজ। এতে শারীরিক ও মানসিক উভয় দিক থেকেই অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এই ডিজিটাল যুগে যেখানে শিশুরা খুব সহজেই বিভিন্ন ধরণের তথ্যের সংস্পর্শে আসে, সেখানে তাদের সঠিক পথে পরিচালনা করা আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং।
বর্তমানে ছেলে-মেয়েরা এখন খুব অল্প বয়স থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার শুরু করছে। এটি একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এর কিছু ভালো এবং খারাপ দুটো দিক রয়েছে।
আরও পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া কীভাবে সম্পর্ককে প্রভাবিত করে?
ছেলে-মেয়েরা একটু বড় হলেই পড়াশোনার প্রয়োজনেই ফোন, টেব, ল্যাপটপ হাতে দেওয়া হয়। এজন্য খুব অল্প বয়সেই এখনকার ছেলে-মেয়েরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি হয়ে পরছে। কিন্তু হাতে মোবাইল, ইন্টারনেট পেলেও বয়স কম হওয়ায়, বিপদের সম্ভাবনা থাকে প্রবল। তাই সন্তান সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার শুরু করার আগে অভিভাবকদের উচিৎ কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক করা।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে ছোটদের কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক করা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিষয়গুলো-
১. ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট
কে কি বলছে তার সবটা সত্যি নয়, তবে বাচ্চারা সহজেই সব কিছু বিশ্বাস করে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্বাস করলে তার মাশুল দিতে হতে পারে কয়েকগুণ। নিজের পরিচয়, বাসস্থান বা অন্য কোনো বিষয়ে ও অন্য মানুষটি যা বলছে, তা সবসময় বিশ্বাস করার কোনো কারণ নেই। অত্যন্ত সুন্দর আচরণের পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য। তাই কারও সঙ্গে কথা বললে সতর্ক থাকতে হবে। কারও ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করলেও ভেবে চিন্তা করে করতে হবে।
২. সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট
আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করা একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবন, ভ্রমণ, বা বিশেষ মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করে থাকে। এ সব পোস্ট, পোস্টে কমেন্ট, লাইক বা শেয়ার করবে তা থেকে যাবে আজীবন। আজ যা ঠিক মনে হচ্ছে, আগামীকাল তার জন্য অনুশোচনা হতেই পারে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু করার আগে হাজারবার ভাবতে হবে।
৩. সাইবার বুলিং
সাইবার বুলিং হল ডিজিটাল ডিভাইস (যেমন মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ট্যাবলেট) ব্যবহার করে কাউকে হয়রানি করা বা উত্ত্যক্ত করা। এটি সাধারণত অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টেক্সট মেসেজ বা ইমেলের মাধ্যমে ঘটে থাকে। সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে মানসিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়।
৪. শিশুরা নিরাপত্তাহীন
অভিভাবকদের উচিত সন্তানদের বন্ধু হয়ে ওঠার। তাদের বোঝানো দরকার কী হয়েছে তা বড় বিষয় নয়। কোথাও সমস্যা হলে বা নিরাপত্তাহীন মনে হলেই অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলা আবশ্যক। অভিভাবকরা কিছু কি বলবেন এটা ভেবে দূরে সরে না থেকে সমস্যাগুলো খোলাখুলি বলতে হবে।
৫. ব্যক্তিগত তথ্য লেনদেন
ছোটদের শিখাতে হবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত তথ্য লেনদেন করা ভালো নয়। এতে করে নিজের বা পরিবারের ক্ষতি হতে পারে। পুরো নাম, ঠিকানা, স্কুলের তথ্য বা বাবা-মায়ের তথ্য, কিছু যেন ভুলেও সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার না করে ছোটদের সেটা বুঝাতে হবে।
ছোটদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার। প্রথমে, তাদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন এবং তাদের অনলাইন কার্যকলাপ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন। তাদের বয়স এবং পরিপক্কতার ওপর নির্ভর করে, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের নিয়মকানুন তৈরি করুন এবং তাদের অনলাইনে নিরাপদ থাকতে শেখান। সাইবার বুলিং, অনুপযুক্ত কন্টেন্ট এবং ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে তাদের সচেতন করুন।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।