চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালতে তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন মোসা. আসমা আক্তার এ মামলা আবেদন করেন।
মামলা গ্রহণ করে আদালত বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছে। বাদীপক্ষকে ওই মামলা ফলো করতে বলেছেন আদালত।
মামলায় অন্য আসামির হলেন- জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, মোত্তাকিন সাকিন শাহ, আল হোসাইন সাজ্জাদ, ওয়াজিবুল আলম, আহসান উল্লাহ, ফজলে রাব্বি, ইয়ামুস জামান, রাশেদ কামাল অনিক, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান ও মো. সুলতান। এরা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা পৌনে ৮টার সময় একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু ছাত্র তাঁকে আটক করে প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাতাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানায়। পরবর্তী সময়ে সে মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাঁকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পিছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধরক মারধর করলে তিনি অচেতন হয়ে পরে।
এ বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় অচেতন যুবককে ধরাধরি করে মেডিকেলে নেওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দিবাগত রাত পৌনে ১টার সময় তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে। এই ঘটনার পরদিন ১৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। পরে ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা এরই মধ্যে আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। ৬ শিক্ষার্থী হলেন—জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হোসেন সাজ্জাদ, আহসান উল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম।