‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া কেউ সংবিধান সংশোধন করতে পারে না’

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেছেন, রাষ্ট্র পরিচালনা করা অত্যন্ত দুরুহ কাজ। একে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে, জনজীবনে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, তাহলে অবশ্যই একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া কেউ সংবিধান সংশোধন করতে পারে না। জনগণের নির্বাচিত সরকারই পারে দেশের প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে। তাই এ বছরের মধ্যেই অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে খুলনার শহীদ হাদিস পার্কে খুলনা জেলা বিএনপির বিশাল জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা, অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা এবং রাষ্ট্রে পতিত ফ্যাসিবাদের নানা চক্রান্তের অপচেষ্টা মোকাবিলাসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত এ কর্মসূচির আয়োজক খুলনা জেলা বিএনপি।

সাবেক মন্ত্রী হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করার জন্য ৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। যে গণতন্ত্র আওয়ামী লীগ দেশ থেকে বিতাড়িত করে একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠিত করেছিল। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জীবন বিপন্ন জেনেই যে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। সেটি যেন বাস্তবে রূপায়িত হয়। সাম্য সামাজিক মর্যাদা, মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে বিএনপি সংগ্রাম করে যাবে।

অক্টোবর মাসের মধ্যে শেখ হাসিনার গণহত্যা বিচার হবে উদ্বৃতি দিয়ে বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, আমরা আশায় বুক বেঁধে আছি। বাংলাদেশের মানুষ এখনো ভরসা রাখছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা হাজার হাজার মায়ের বুক খালি করেছে তাদেরকে যেন কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র রক্ষা করতে না পারে। সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তারিখ ১১৫ বার পেছানো হয়েছে। আওয়ামী লীগ একটা চার্জশিট পর্যন্ত দিতে পারেনি।

জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ও খুলনা মহানগর শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মো. শফিকুল আলম তুহিন।

খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. মনিরুজ্জামান মন্টুর সভাপতিত্বে, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমরেজুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন, খুলনা জেলা যুবদলের আহ্বায়ক এবাদুল হক রুবায়েত, নগর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ সুমন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব নাদিমুজ্জামান জনি, নগর যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম রুবেল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নবনির্বাচিত আহ্বায়ক আতাউর রহমান রুনু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিরাজুর রহমান মিরাজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আব্দুল মান্নান মিস্ত্রী, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব ইস্তিয়াক আহমেদ ইস্তি, জেলা শ্রমিকদলের আহ্বায়ক উজ্জ্বল কুমার সাহা, জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ছন্দা, জেলা ছাত্রদলের গোলাম মোস্তফা তুহিন ও মহানগর ছাত্রদলের তাজিম বিশ্বাস প্রমুখ।

শুরুতেই কোরআন তিলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা ফারুক হুসাইন। শ্রীমত ভগবত গীতা পাঠ করেন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সুদীপ্ত মল্লিক। জনসভায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু ও নিরাপদে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রার্থনা এবং সর্বশেষ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সব শহীদদের মাগফেরাত কামনা করা হয়। একই সঙ্গে চিকিৎসাধীন খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শেখ আবু হোসেন বাবুর পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন নেতারা।