পপির কষ্টের টাকা ১৪ গোষ্ঠী খেয়ে শেষ করেছে : পলি

ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপির বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ তুলেছেন তার মা মরিয়ম বেগম ও বোন ফিরোজা পারভীন। এ বিষয়ে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) খুলনার সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় তারা একটি জিডি দায়ের করেছেন।

জিডির সূত্র ধরে জানা যায়, পৈতৃক জমি দখলে নেওয়ার জন্য স্বামী আদনান উদ্দিন কামাল, কল্লোল মজুমদার, শিপনসহ সোমবার বেলা ১২টা ৩০ মিনিটের দিকে সোনাডাঙ্গা থানাধীন শিববাড়ি, ভাড়াটিয়া বাড়ির সামনে হাজির হন। বাধা দিলে একপর্যায়ে ফিরোজা পারভীনসহ সবাইকে হুমকি দেন পপি ও তার স্বামী।

বিষয়টি নিয়ে পপির মা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েটা আগে ভালোই ছিল। কিন্তু বিয়ের পর ৫-৬ বছর ধরে স্বামীর প্ররোচনায় আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তার বাবার জমি দখলের চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যেই পপির বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় সে নিজের নামে ৫ কাঠা জমি লিখিয়ে নিয়েছেন। ওই সময় নায়ক আলমগীর সাহেব বিষয়টি সুরাহা করে দেন। এখন পপি বাকি ৬ কাঠা জমি দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের নানাভাবে হয়রানির মধ্যে রেখেছে। এই বয়সে আমরা কোথায় যাব।’

পপির মেজো বোন ফিরোজা পারভীন বলেন, ‘আমরা ৪ বোন, ২ ভাই। পপি সবার বড়। সে আমাদের বাবার জমি দখলের চেষ্টা করছে অনেক বছর ধরেই। বাবার মৃত্যুর পর থেকেই আমরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। পপি ছাড়া আমরা সবাই এক আছি। আগেও আমাদের পেশিশক্তির ভয় দেখানো হয়েছে। বিষয়টি নায়ক আলমগীর, জায়েদ খানসহ আরও দুয়েকজন জানেন। সব জানার পর আলমগীর সাহেব পপিকে বিষয়টি সমাধানের কথা বলেছিলেন। কিন্তু পপি কোনো কিছুতেই থামছে না। স্বামীসহ পপি খুলনায় অবস্থান করছেন। আমাদের হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।’

এদিকে মা-বোনের এমন বক্তব্যের জবাবে পপি বলেন, ‘বাবা ও চাচার কাছ থেকে ৬ কাঠা জমি আমার কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে কিনেছি। কিন্তু এদের অত্যাচারের জন্য এখনো পর্যন্ত এই জমি ভোগ করতে পারিনি।’

পুরো পরিবার পপির উপার্জনে সারাজীবন চলেছে। এ তথ্য উল্লেখ করে এই নায়িকা বলেন, ‘এদের শরীরের চামড়া, জামা কাপড় সব আমার পরিশ্রমের টাকায় কেনা৷ আমার পরিবারের কেউ কখনো উপার্জন করে খায়নি। ৯৫ সালে আমার বাবা কিন্তু এদেরকে (পরিবার) উপার্জন করে চালায়নি। আমার টাকায় চলেছে।’

পপির সুরেই সুর মিলিয়েছেন তার দীর্ঘদিনের সহশিল্পী চিত্রনায়িকা রিয়ানা রহমান পলি। বুধবার দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘একজন পপি অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করেছে সেই টাকা ১৪ গোষ্ঠী মিলে কাজ না করে খেয়ে শেষ করবে, আর তার হিসেব চাইলে পপি খারাপ? সত্যিই আমরা অসহায়!’

এ বিষয়ে একটি সংবাদমাধ্যমকে পলি বলেন, পপি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় থেকে তার পরিবারের কারো রোজগারের পথ ছিল না। নিজের টাকায় পরিবারের জন্য তিনি সবকিছু করেছেন। এমনকি বিয়েও করেছেন দেরিতে। নিজের টাকায় তিনি অনেক জায়গা জমি কিনেছেন। এই সময় এসে পপির বিরুদ্ধে যে জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে তা একেবারেই অযৌক্তিক।

জানা গেছে, পারিবারিক বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে খুলনার শিববাড়ি এলাকায় পপির বাবার ১১ কাঠা জমি। অভিযোগ অনুযায়ী, এর মধ্যে ৫ কাঠা জমি আগে থেকেই নিজের নামে লিখিয়ে নিয়েছেন পপি। এখন বাকি ৬ কাঠার মালিকানা পেতে মা, ভাই ও বোনদের চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।