বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থ যেসব জেলার ব্যাংকের শাখাগুলোতে বেশি এসেছে, তাদের চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথম ৯ মাসের (জুলাই-মার্চ) তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে প্রবাসী আয়ের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলা। দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা।
অবশ্য দেশের আটটি বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামের ছয় জেলাই রয়েছে প্রবাসী আয়ের শীর্ষ দশের তালিকায়। এই বিভাগের মোট ১১টি জেলার মধ্যে চট্টগ্রাম রয়েছে শীর্ষ তালিকার দ্বিতীয়তে। এছাড়া শীর্ষে আছে কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর। তবে সবচেয়ে কম প্রবাসী আয় এসেছে একই বিভাগের রাঙামাটি জেলায়।
চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) জুলাই থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত ৯ মাস বাংলাদেশ ব্যাংকের জেলাভিত্তিক হালনাগাদ রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ের তথ্য বলছে এসব কথা। সেখানে দেখা গেছে, গত ৯ মাসে প্রবাসীরা দেশে দুই হাজার ১৭৮ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে আলোচিত ৯ মাসে প্রবাসী আয় ঢাকা বিভাগে এসেছে ৭১৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। যা শীর্ষ স্থানে উঠে এসেছে। এই বিভাগের মোট ১৩টি জেলার মধ্যে ঢাকা রয়েছে শীর্ষ তালিকার প্রথমে। আলোচিত ৯ মাসে ঢাকা জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে এক হাজার ৬১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার। একই বিভাগের টাঙ্গাইল জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৪৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। যা দেশের মধ্যে শীর্ষ নবম অবস্থানে আছে।
এছাড়া অন্যান্য বিভাগের মধ্যে গত ৯ মাসে চট্টগ্রাম বিভাগের এসেছে ৬০৬ কোটি ২০ লাখ ডলার, সিলেটের ১৯৪ কোটি ১০ লাখ ডলার, খুলনায় ৯৮ কোটি ২৬ লাখ ডলার, রাজশাহীতে ৭৪ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, বরিশালে ৬২ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, ময়মনসিংহে ৪৫ কোটি ১১ লাখ ডলার এবং রংপুরে ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ডলার।
অপরদিক প্রবাসী আয়ের শীর্ষ দশের তালিকায় রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জেলা। আলোচিত ৯ মাসে এই বিভাগে প্রবাসী আয় এসেছে ৬০৬ কোটি ২০ লাখ ডলার। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ১৮১ কোটি ডলার। এছাড়া কুমিল্লা জেলায় ১১৬ কোটি ২৮ লাখ ডলার, নোয়াখালীতে ৬৬ কোটি ৬৯ লাখ ডলার, ফেনীতে ৬৩ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৬২ কোটি ২১ লাখ ডলার এবং চাঁদপুরে ৬০ কোটি ৩২ লাখ ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। সে হিসেবে, চট্টগ্রাম বিভাগে কুমিল্লা দ্বিতীয় এবং দেশের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছে। এরপর নোয়াখালী পঞ্চম, ফেনী ৬ষ্ঠ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সপ্তম ও অষ্টম অবস্থানে আছে চাঁদপুর। একই বিভাগের রাঙামাটি জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে এক কোটি ৯৩ লাখ ডলার। যা দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বনিম্ন এটি। সবনিম্নে দ্বিতীয়তে রয়েছে একই বিভাগের বান্দরবান। এই জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে এক কোটি ৯৯ লাখ ডলার।
এছাড়া সিলেট বিভাগে রয়েছে দুটি জেলা। এর মধ্যে সিলেট জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৯৯ কোটি ১৫ লাখ ডলার। যা দেশের মধ্যে শীর্ষ চতুর্থ অবস্থানে আছে। একই বিভাগের মৌলভীবাজার জেলায় প্রবাসী আয় এসেছে ৪১ কোটি ১৫ লাখ ডলার। যা দেশের মধ্যে দশম অবস্থানে আছে।
এছাড়া অন্যান্য জেলার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৩৭ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, নরসিংদী ৩৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার, লক্ষ্মীপুর ৩৪ কোটি ৯১ লাখ ডলার, নারায়ণগঞ্জ ৩৩ কোটি ৫৭ লাখ ডলার, মাদারীপুর ৩৩ কোটি ৩২ লাখ ডলার, গাজীপুর ৩১ কোটি ৯২ লাখ ডলার, কিশোরগঞ্জ ৩১ কোটি ৭৬ লাখ ডলার, হবিগঞ্জ ২৬ কোটি ৯১ লাখ ডলার, সুনামগঞ্জে ২৬ কোটি ৮৯ লাখ ডলার, বরিশাল ২৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার, শরীয়তপুর ২৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার, ফরিদপুর ২৪ কোটি ২৩ লাখ ডলার, ময়মনসিংহ ২৩ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, মানিকগঞ্জ ২০ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, যশোর ১৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার, বগুড়া ১৫ কোটি ৩১ লাখ ডলার, কুষ্টিয়া ১৪ কোটি ৯৫ লাখ ডলার, গোপালগঞ্জ ১৪ কোটি আট লাখ ডলার, কক্সবাজার ১৪ কোটি তিন লাখ ডলার, খুলনা ১৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার, পাবনা ১২ কোটি ৮৪ লাখ ডলার, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০ কোটি ৫৬ লাখ ডলার, চুয়াডাঙ্গা ১০ কোটি ৫২ লাখ ডলার, ভোলা ১০ কোটি ১৭ লাখ ডলার, রাজশাহী ৯ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, রাজবাড়ী ৯ কোটি ৪৩ লাখ ডলার, ঝিনাইদহ ৯ কোটি ২৪ লাখ ডলার, সিরাজগঞ্জ ৯ কোটি ১২ লাখ ডলার, রংপুরে ৯ কোটি তিন লাখ ডলার, পিরোজপুর আট কোটি ৬৭ লাখ ডলার, নওগাঁ আট কোটি ৪১ লাখ ডলার, মেহেরপুর আট কোটি ১৪ লাখ ডলার, সাতক্ষীরা সাত কোটি ৯১ লাখ ডলার, পটুয়াখালী ছয় কোটি ৭৩ লাখ ডলার, বাগেরহাট ছয় কোটি ৭১ লাখ ডলার, বরগুনা ছয় কোটি ২৭ লাখ ডলার, মাগুরা ছয় কোটি ১৯ লাখ ডলার, নাটোর ছয় কোটি ১২ লাখ ডলার, ঝালকাঠি পাঁচ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, গাইবান্ধায় পাঁচ কোটি ৭৩ লাখ ডলার, দিনাজপুর পাঁচ কোটি ৭২ হাজার ডলার, নেত্রকোনা পাঁচ কোটি ৪৫ লাখ ডলার, নড়াইল চার কোটি ৭১ লাখ ডলার, কুড়িগ্রামে চার কোটি ছয় লাখ ডলার, শেরপুর তিন কোটি ৬৩ লাখ ডলার, খাগড়াছড়ি তিন কোটি ৪৬ লাখ ডলার, নীলফামারী তিন কোটি ৪৬ লাখ ডলার, জয়পুর তিন কোটি ১২ লাখ ডলার, ঠাকুরগাঁও দুই কোটি ৮৯ লাখ ডলার, পঞ্চগড় দুই কোটি ৫১ লাখ ডলার এবং লালমনিরহাট দুই কোটি ডলার।