বাংলাক্রাফট নির্বাচন পদ্ধতির অনিয়মের প্রতিবাদে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা সম্মিলিত ফোরাম

বর্তমান সভাপতি এস. ইউ. হায়দার, পূর্বের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর, চট্টগ্রাম-৩ আসনে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণার নামে বাংলাক্রাফটের অর্থ ব্যবহার করেছেন। তার নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিপ্রায়ে নির্বাচন কমিশন গঠনেও একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছে সম্মিলিত ফোরাম (বাংলাক্রাফট)।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাক্রাফট নির্বাচন পদ্ধতির অনিয়মের প্রতিবাদে নির্বাচন বর্জন করে সম্মিলিত ফোরাম । এ উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সম্মিলিত ফোরাম। বিজয়ের এই মাসে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সেই সকল বীর শহীদদের, যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা লাল-সবুজের স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। পাশাপাশি ২৪ জুলাই-এর বিপ্লবের শহীদদেরও শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি, যাঁদের ত্যাগের মাধ্যমে আমরা পেয়েছি দ্বিতীয় বাংলাদেশ।

আজ আপনাদের সামনে আমরা আমাদের প্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ হস্তশিল্প প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারক সমিতি, তথা বাংলাক্রাফট-এর ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরতে চাই।

বাংলাক্রাফটের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

১৯৭৯ সালে, দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাক্রাফট প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরুর দিনগুলোতে সংগঠনের অফিস পরিচালনার মতো কোনো জায়গা ছিল না। সহকর্মীদের বাড়িতে কার্যক্রম পরিচালনা করেই সংগঠনটি এগিয়ে চলেছিল। সেই ছোট পরিসর থেকে আজ আমরা ৫০ লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি এবং ৫০০ সদস্যের এক বৃহৎ পরিবারের অংশে পরিণত হয়েছি।

নির্বাচনী ধারা ও অর্জন

বাংলাক্রাফট ১৯৮৩-৮৪ সালে প্রথমবার পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন শুরু করে। ২০২০-২০২২ মেয়াদে সম্মিলিত ফোরাম পরিচালিত পর্ষদ উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করে, যার মধ্যে:

  1. বাংলাক্রাফটের নিজস্ব অফিস ক্রয় (২,৮০০ বর্গফুট, মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা)।
  2. ৯৩ লক্ষ টাকার FDR এবং ব্যাংকে ৬০ লক্ষ টাকার সঞ্চয়।
  3. BIDA, BPC, EPB, SME Foundation, FBCCI, এবং E-CAB এর সাথে কার্যকর সংযোগ স্থাপন।
  4. উদ্যোক্তাদের পণ্য বিপণনে অনলাইন মার্কেটপ্লেস (দারাজ, ঐক্য, আমাজন) ব্যবহারের সুযোগ তৈরি।
  5. প্রথমবার ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং মাসিক বুলেটিন চালু করা।

সমমনা পরিষদের অনিয়ম

২০২২-২৪ মেয়াদে সমমনা পরিষদের পরিচালনায় বাংলাক্রাফট লুটপাট, বৈষম্য এবং অরাজকতার শিকার হয়েছে।

  1. FDR ভাঙা ও অপব্যবহার: ৪০ লক্ষ টাকা দিয়ে ব্যক্তিগত গাড়ি ক্রয়, যা সংগঠনের কাজে ব্যবহৃত হয়নি।
  2. বিধি বহির্ভূত অর্থ লুটপাট: ট্রেনিং ও মেলার নামে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা অপব্যবহার।
  3. সদস্যদের সঠিক তথ্য থেকে বঞ্চিত করা: বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ফান্ড অপব্যবহার।
  4. অবৈধ সম্মানী ভাতা: প্রতি মিটিংয়ে ২০০০ টাকা করে সম্মানী ভাতা গ্রহণ, যা বাংলাক্রাফটের সংবিধানের পরিপন্থী।

সভাপতির অসদাচরণ

বর্তমান সভাপতি এস. ইউ. হায়দার, পূর্বের ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর, চট্টগ্রাম-৩ আসনে জাতীয় নির্বাচনের প্রচারণার নামে বাংলাক্রাফটের অর্থ ব্যবহার করেছেন। তার নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিপ্রায়ে নির্বাচন কমিশন গঠনেও একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আমাদের আহ্বান

সম্মানিত উপস্থিতি, বাংলাক্রাফটের সুরক্ষা ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আমরা এই অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং বাংলাক্রাফটের সুষ্ঠু নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।