বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান পরিস্থিতি সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিএসইসির জন্য পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ, যোগ্য চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ চান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) অ্যসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে (পরিচালক ও আহবায়ক) মোঃ আবুল হোসেন এবং (সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত পরিচালক) মোহাম্মদ মিরাজ উস সুন্নাহ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়, বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বুধবার(৫ মার্চ) কমিশনের নিকট তাদের ন্যায্য দাবীদাওয়া উত্থাপন করেছেন। দাবীদাওয়ার কোন সুরাহা না করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপর পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে ডেকে এনে লেলিয়ে দিয়ে লাঠিচার্জ ও হামলা চালিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আহত করার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানোয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন তীব্র প্রতিবাদ ব্যক্ত করছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজ কর্মস্থলে লাঠিচার্জ ও হামলার শিকার হওয়া বিএসইসি তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।
কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরর দাবী স্পষ্ট- আমরা কারো ক্রীড়নক না হয়ে, আইন কানুন মেনে দেশের মানুষের জন্য, বিনিয়োগকারীদের জন্য ও সর্বপরি পুঁজিবাজারের উন্নতির জন্য স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাই। কিন্তু অত্যন্ত বেদনাদায়ক হলেও সত্য যে বাংলাদেশ ব্যাংকের মতো একটি নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও, বাংলাদেশ ব্যাংক পেয়েছে দক্ষ ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব, আর পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি পেল একদল অনভিজ্ঞ নেতৃত্ব।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সবাই ইতোমধ্যে জানেই যে বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ অন্যান্য কমিশনারদের পুঁজিবাজার নিয়ে ভালো ধারণা নেই, অভিজ্ঞতা নেই, এমনকি পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের কোন সদিচ্ছা নেই। এভাবে কাজ করা যায় না। তাদের অদক্ষতায় একদিকে যেমন পুঁজিবাজারে দুর্দিন যাচ্ছে, অন্যদিকে তাদের সীমাহীন দুর্ব্যবহার, স্বেচ্ছাচারী, স্বৈরাচারী ও আইন বহির্ভূত মনোভাব ও কাজে কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা হতাশ।
এমতাবস্থায় পুঁজিবাজারের উন্নতি ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণসহ কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদেরর সুষ্ঠু ও স্বাধীনভাবে কাজ করার স্বার্থে ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরর উপর হামলার প্রতিবাদে চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও অন্যান্য কমিশনারদেরর পদত্যাগ দাবী করছে। অন্যথায়,আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করবে।
খুনি হাসিনা কর্তৃক পুজিবাজারকে ধ্বংস করার অভিপ্রায়ে পূর্বাতন প্রনীত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ২০২২ এর খসড়া তড়িঘড়ি করে সংস্কার কার্যক্রমের নাম দিয়ে পাশ করানোর অপচেষ্টা চেয়ারম্যান ও কমিশন কর্তৃক কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে স্বৈরাচারী ও দাসসুলভ এবং অনৈতিক আচরণের মাধ্যমে কমিশনের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ বিঘ্নিত করা হচ্ছ।
উপরোক্ত বিষয়ের আলোকে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষথেকে প্রস্তাবনা:
১. বর্তমান কমিশনকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
২.কমিশন কর্তৃক সেনাবাহিনীকে মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ডেকে কমিশনের-কর্মকর্তা কর্মচারীদের লাঠিচার্জ করার জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে।
৩.প্রধান উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে বিএসইসির জন্য পুঁজিবাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ, যোগ্য চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগ প্রদান।
৪. সংস্কারের অংশ হিসেবে কমিশনকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং দ্রুত বাস্তবায়ন।