রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ‘বীর প্রতীক’ মাহবুব আহমেদ সহিদকে দাফন

বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ‘বীর প্রতীক’ খেতাবপ্রাপ্ত মাহবুব আহমেদ সহিদ আর নেই। শুক্রবার (২ মে) বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যা রেখে গেছেন।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মাহবুব শহীদ ছিলেন সেক্টর ২-এর অধীন ঢাকার ‘ক্র্যাক প্লাটুন’-এর একজন সাহসী যোদ্ধা। তিনি ‘মাওলানা শহীদ গ্রুপ’-এর দ্বিতীয় ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ঢাকায় একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ গেরিলা অভিযানে নেতৃত্ব দেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অভিযানগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৭১ সালের ১৯ অক্টোবর মতিঝিলের হাবিব ব্যাংকে দিবালোকে পরিচালিত বোমা হামলা। এই অপারেশনটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে একটি সাহসিকতাপূর্ণ এবং কৌশলগত সাফল্যের উদাহরণ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে।

দেশমাতৃকার প্রতি অতুলনীয় সাহস ও অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করে।

পেশাগত জীবনে মাহবুব আহমেদ সহিদ ছিলেন ট্যালেন্ট ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসেস-এর স্বত্বাধিকারী এবং দীর্ঘদিন ধরে ইন্ডেন্টিং ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি সমাজসেবায়ও সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। সর্বশেষ তিনি বাংলাদেশ লায়ন্স ফাউন্ডেশন, জেলা ৩১৫ A1-এর ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তাঁর প্রথম জানাজা শুক্রবার রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার জি ব্লক জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। পরদিন শনিবার ফজরের নামাজের পর নয়াপল্টন জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আজিমপুর কবরস্থানে তাঁকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হয়। পরে সকাল ১১টায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্ধারিত কবরস্থানে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।

মাহবুব আহমেদ সহিদ-এর আত্মার মাগফিরাত কামনায় তাঁর পরিবার দেশবাসীর কাছে দোয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।