প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, বিগত ২১ সেপ্টেম্বর দেশের বিচারকদের উদ্দেশে আমার এক ভাষণে বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্য পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনের ঘোষণা আমি দিয়েছি। এখন সেই লক্ষ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’
আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর আইনজীবী সমিতিতে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের সমাজের সবচেয়ে অসহায় মানুষ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আদালতে আইনজীবীদের দ্বারস্থ হন। এই অসহায় মানুষদের আইনি সেবা দেওয়ার নৈতিক দায়িত্ব আইনজীবীদের রয়েছে। সে দায়িত্ব পালনে আমাদের সবাইকে মানবিক হতে হবে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, মনে রাখবেন আইনজীবী হিসেবে আপনার সাফল্য কেবল মামলার দাখিল, দরখাস্ত মঞ্জুর বা নামঞ্জুর কিংবা জয়-পরাজয়ের ভিত্তিতে মাপলে চলবে না। আইনজীবী হিসেবে আপনি কতটুক প্রজ্ঞা, উদারতা দেখাচ্ছেন—সেটাই মূল বিষয়। আপনি ন্যায় প্রতিষ্ঠায় কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছেন সেই বিষয়ের উপর ভিত্তি করেই অন্যদের কাছে আপনার আইনজীবী হিসেবে পরিচয় ফুটে উঠবে।
আইন পেশা নিছক জীবিকা অর্জনের জন্য নেবেন না আইনজীবীদের প্রতি এমন আহ্বান জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণের উপায় হিসেবে বিবেচনায় আইনজীবী হিসেবে আপনার প্রকৃত সার্থকতা অর্জন হবে। মানুষের অধিকার রক্ষার ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য বিচারালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আর এ উদ্দেশ্যর কথা লেখা রয়েছে আমাদের সংবিধানে। ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট এ দেশের সাধারণ মানুষ নেমে এসেছিল রাজপথে। বিজ্ঞ আইনজীবীরা আইন পেশার রক্ষা ও পরিচালনায় যথার্থ নৈতিক মানদণ্ড রক্ষায় গুরুত্ব না দিলে সেই অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
ফরিদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল কাদের মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহিদ ব্যাপারীর সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা, পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহজাহান, সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা, অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা প্রমুখ।
এর আগে সকালে প্রধান বিচারপতি ফরিদপুর আদালত প্রাঙ্গণে আগত বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মিত বিশ্রামাগারের শুভ উদ্বোধন করেন। পরে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করে আদালত প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন।