শিল্পে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হবে: বিসিএমইএ

শিল্পে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া বন্ধ ও সিরামিক শিল্পের সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিরামিক ম্যানু্ফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমইএ)। গ্যাস সংকটের কারণে ইতিমধ্যে অনেক শিল্প রুগ্ন হয়ে পড়েছে, এ অবস্থায় দাম বাড়ানো হলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছে সংগঠনের নেতারা।

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বিসিএমইএ এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মইনুল ইসলাম।

তিনি বলেন, নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান রুগ্ন হয়ে পড়েছে। গ্যাসের চাপ ১৫ পিএসআই (চাপ প্রতি বর্গইঞ্চি) পাওয়ার কথা, সেখানে দুই পিএসআই এমনকি কখনো কখনো শুন্যতেও নেমে আসছে। নির্দিষ্ট মাত্রায় গ্যাস না পেলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় থাকা পণ্য তৎক্ষণাত নষ্ট হয়ে যায়। বিগত বছরগুলোতে গ্যাস সরবরাহ যথাযথ না থাকায় উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। যথা সময়ে পণ্য সরবরাহ দিতে না পারায় বিশ্বের অনেক নামিদামি কোম্পানি অর্ডার বাতিল করেছে। ব্যাংক ঋণের কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে না পেরে কোন প্রতিষ্ঠান অর্ধেক সক্ষমতায় কোন প্রতিষ্ঠান আংশিক উৎপাদন করছে।

বিগত ৯ বছরে গ্যাসের দাম ৩৫৪ শতাংশ বাড়ানোর কারণে সিরামিক শিল্পের অবস্থা করুণ। নতুন করে ১৫২ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই হারে দাম বাড়ানো হলে প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিপুল পরিমাণ গ্যাস চুরি হচ্ছে ও সিস্টেম লস রয়েছে, সেদিকে নজর না দিয়ে, গ্যাস দাম বাড়ানোর পথে হাটছে। আমরা ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিইআরসিতে চিঠি দিয়ে উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। তাদের দিক থেকে পজেটিভ সাড়া পাইনি।

তিনি আরও বলেন, সিরামিক শিল্প যেমন রফতানি খাত থেকে আয় করছে, তেমনি ৮০টি কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের কারণে আমদানি হ্রাস পাওয়ায় বছরে অন্তত ২ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করছে। দেশি-বিদেশি প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা এই খাতে বিনিয়োগ রয়েছে। রফতানি খাত থেকে আয়ের পরিমাণ প্রায় ৫০০ কোটি (বার্ষিক) টাকা। অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৮৫ শতাংশ যোগান দিয়ে আসছে।

তিনি বলেন, বিগত ১০ বছরে ১৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। শিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। সিরামিক এখন আর বিলাসী পণ্য হিসেব গণ্য করা যায় না। এখন এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক থাকতে পারে না। সহায়তা পেলে গার্মেন্ট খাতের মতো এই শিল্পের অপার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিসিএমইএ উপদেষ্টা মীর নাসির উদ্দিন বলেন, এখন দাবির যুগ চলছে, নানামুখী আন্দোলনের কারণে শিল্পের অবস্থা খারাপ। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক পর্যায়ে নেই। এসব বিষয় শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলছে।

এ সময় সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মামুনুর রশীদ, এক্সিলেন্ট সিরামিক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল হাকিম (সুমন) বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।