সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের মধ্যপ্রাচ্য প্রোগ্রামের একজন সিনিয়র ফেলো নাতাশা হল বলেছেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ দেশ ছাড়ার পর মনে হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে ৫৪ বছরের অত্যাচারের অবসান হয়েছে। আজ রোববার (৮ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নাতাশা হল বিবিসি রেডিও ৫ লাইভকে বলেছেন, ‘এটা সত্যিই মনে হচ্ছে যে আমরা সিরিয়ায় ৫৪ বছরের অত্যাচারের শেষ ঘণ্টায় রয়েছি। ১৯৭০ এর দশকের শুরুতে আসাদ পরিবারের শাসনের শুরু হয়েছিল।’
নাতাশা বলেন, দেশে যা ঘটে চলেছে, তা আগের ঘটনাগুলোর সংমিশ্রণের ফলাফল। ইরান- রাশিয়াসহ আসাদের মিত্ররা বিশ্বের অন্যান্য ঘটনাগুলোর মতো ‘দুর্বল’ হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দ্রুতগতিতে দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু উপশহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, রাজধানী ক্রমশ বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাচ্ছে। বিদ্রোহীরা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহরে প্রবেশ করেছে। এ শহরটি দামেস্ককে উত্তর ও উপকূলের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে।
এসওএইচআর ওয়ার মনিটর বলেছে, দামেস্ক বিমানবন্দর ছেড়ে যাওয়া একটি ব্যক্তিগত বিমান সম্ভবত আসাদকে বহন করেছিল। বিমানবন্দরে সরকারি সৈন্যদের বিদায়ের পর বিমানটি আকাশে উড়ে।
অন্যদিকে বিদ্রোহীরা বলেছে, তারা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করেছে। তবে এই শহরে প্রবেশের পথে সরকারি বাহিনীকে কোথাও দেখা যায়নি। আমরা সিরিয়ার জনগণের সাথে আমাদের বন্দিদের মুক্ত করার এবং তাদের শিকল মুক্ত করার ও সেদনায়া কারাগারে অন্যায়ের যুগের সমাপ্তি ঘোষণা করার খবর উদযাপন করছি।
এর আগে মধ্যাঞ্চলীয় শহর হোমস থেকে সেনা প্রত্যাহারের পর হাজার হাজার বাসিন্দা রাস্তায় নেমে আসেন এবং স্লোগান দেন, “আসাদ চলে গেছে, হোমস মুক্ত” এবং “সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক এবং বাশার আল-আসাদের পতন হোক।
বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন। তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।