সীমান্তে আর কোনো লাশ ঝুলে থাকলে কাঁটাতার অভিমুখে মার্চ করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রাম স্বাধীনতার বিজয় স্তম্ভে ‘মার্চ ফর ফেলানী’র যাত্রা শুরুর আগে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, ‘আর যদি আমার কোন ভাই বা আমার কোন বোন আমাদের ওই সীমান্তে তাঁরকাটায় লাশ হয়ে ঝুলে থাকে তাহলে কাঁটাতারকে লক্ষ্য করে আজকের মার্চ ফর ফেলানীর মতো লং মার্চ করা হবে। আর যদি কাঁটাতারকে উদ্দেশ্য করে সেই মার্চ হয়, তাহলে তা কাঁটাতার ভেদ করে যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর যাবে।’
তিনি বলেন, ‘কুড়িগ্রামে মার্চ ফর ফেলানী থেকে বলতে চাই, আমরা বাংলাদেশের সীমান্তে কোন লাশ দেখতে চাই না। বাংলাদেশের যত নাগরিককে সীমান্তে লাশ করা হয়েছে তার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন বাংলাদেশ দিয়েছে সেই ছাত্র-জনতা নতজানু পররাষ্ট্রনীতি মেনে নেবে না। আগামীতে বাংলাদেশে যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা যদি ক্ষমতা আকড়ে ধরার জন্য কোনো দেশের দালাল হন তাহলে তাদের পরিণতি খুনি হাসিনার মতো হবে।’
সারজিস বলেন, ‘আমাদের একটি পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র গত ৫৩ বছরে একটি গোষ্ঠীকে ক্ষমতায় বসিয়ে যেভাবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির সার্বভৌমত্বকে কুক্ষিগত করে রেখেছিল, ছাত্র-জনতা দুই হাজার চব্বিশে তার মোক্ষম জবাব দিয়েছে।’
এ সময় ফেলানী হত্যাসহ সীমান্তে সকল নাগরিক হত্যার বিচার, সীমান্তে মরণঘাতী অস্ত্র বন্ধ, শহীদ ফেলানীর নামে কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবনের নামকরণ, নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাতিল করে সাম্যের ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ ও কুড়িগ্রামের চরের জীবন জীবিকার উন্নয়নে নদী সংস্কারের ৫ দফা দাবি জানান সারজিস আলম।
লং মার্চটি সকাল সাড়ে ১০টায় কুড়িগ্রামের জেলা শহরের কলেজ মোড় থেকে শুরু হয়। লং মার্চ শেষ হবে কুড়িগ্রামের নাগশ্বরী উপজেলা রামখানা ইউনিযনের নাখারগঞ্জ গ্রামে ফেলানীর বাড়িতে।
লং মার্চে আরও উপস্থিত রয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দপ্তর সম্পাদক জাহিদ আহসান, সমন্বয়ক রকিব মাসুদসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা। এ ছাড়াও লং মার্চে ফেলানীর বাবা নুর ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
লং মার্চ শেষে নাগেশ্বরীর নাখারগঞ্জ বাজারে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।