ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) ১৫০ বছরপূর্তির অনুষ্ঠানে যাচ্ছে পাকিস্তান। বাংলাদেশ এই অনুষ্ঠানে না গেলেও এতে ভার্চুয়ালি অংশ নিতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মমিনুল ইসলাম।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে ১৮৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের যাত্রা শুরু হয়। সে হিসাবে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি সংস্থাটির ১৫০ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এই উপলক্ষে ওই দিন ‘অখণ্ড ভারত’ নামে জাঁকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) বলছে, বাংলাদেশ ছাড়াও এই আয়োজনে যোগ দিতে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মিয়ানমার, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও নেপালকে আমন্ত্রণ পাঠিয়েছে ভারত সরকার। আমন্ত্রণ পেয়েছে মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশও। এতে অংশ নেবে বলে এরই মধ্যে পাকিস্তান জানিয়েছে।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণপত্র সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে পাঠানো হয়েছে। মাসখানেক আগে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মমিনুল ইসলাম।
আজ শনিবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘অত্যাবশ্যক না হলে সরকারি খরচে বিদেশ সফরে বাধ্যবাধকতা থাকায় অনুষ্ঠানে যাওয়া হচ্ছে না। তার মানে এই নয় যে, ভারতের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক নেই। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে আমাদের ধারাবাহিক সহযোগিতার সম্পর্ক আছে। তাদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হয়। তবে সুযোগ থাকায় অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকা যাবে।’
বিষয়টি সম্পর্কে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত এসেছে কিনা জানতে চাইলে মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই আমন্ত্রণ শুধু আবহাওয়া অধিদপ্তরকে পাঠানো হয়েছে। এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আবহাওয়া অধিদপ্তরের রয়েছে, উচ্চ পর্যায়কে জানানোর বাধ্যবাধকতা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘যেহেতু অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণকারী যোগ দেওয়ার খরচ দেবে না, সেক্ষেত্রে এটা সরকারি খরচে করতে হবে। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। বাধ্যতামূলক হলে খরচের জন্য চাহিদাপত্রসহ উচ্চ পর্যায়কে অবহিত করা হত। কিন্তু তা না হওয়ায় এর প্রয়োজন পরেনি।’
ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের উদাহরণ তুলে ধরে গত ২০ ডিসেম্বরে একটি বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে গিয়েছিলেন বলেও জানান এই আবহাওয়াবিদ।
আইএমডির এক শীর্ষ কর্মকর্তা পিটিআইকে বলেন, ‘আমরা চেয়েছি (১৫০ বছর আগে) আইএমডি যখন চালু হয়, সে সময় যেসব দেশ অখণ্ড ভারতের অংশ ছিল, তারা সবাই যেন এই উৎসবে যোগ দেয়। ইতোমধ্যে পাকিস্তান এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের দিক থেকে সাড়া মেলেনি।’
১৮৬৪ সালে সাইক্লোনে বিধ্বস্ত কলকাতা এবং পরবর্তীতে ১৮৬৬ ও ১৮৭১ সালে বর্ষা মৌসুমে প্রবল বৃষ্টিপাতের পর দুর্যোগের মোকাবিলায় ১৮৭৫ সালের ১৫ জানুয়ারি এই সংস্থা চালু করা হয়।
শুরুতে এর সদর দপ্তর কলকাতা ছিল। পরে ১৯০৫ সালে শিমলায়, ১৯২৮ সালে পুনেতে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ১৯৪৪ সাল থেকে দিল্লিতেই আছে এই কার্যালয়।