আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি স্টেডিয়ামে সংস্কার কাজ করছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। এজন্য তাদের বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করতে হয়েছে। ফলে অর্থসঙ্কটের সম্মুখীন পিসিবি, যার প্রভাব পড়েছে দেশটির নারী ক্রিকেটারদের ওপর। জানা গেছে, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ১ সেপ্টেম্বর থেকে মুলতানে ট্রেনিং ক্যাম্প করলেও, সেখানে কোনো দৈনিক ভাতা পাচ্ছেন না।
ঘরের মাঠে পাকিস্তানের মেয়েরা আগামী সপ্তাহে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। সে উপলক্ষ্যেই তারা এই ক্যাম্প করছে। কিন্তু দৈনিক ভাতা বন্ধ থাকায় খাবারের খরচ ক্রিকেটারদেরই বহন করতে হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছেন ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের নারী দলের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অল্প পরিমাণে দৈনিক ভাতা দেওয়া হত। তবে এবার সেটাও দেওয়া হচ্ছে না। অবশ্য এর জবাবে পিসিবি কর্তারা বলেছেন তারা ক্যাম্পে সদস্যদের আবাসনে থাকার পাশাপাশি তিন বেলা খাবারও দিচ্ছেন, সেই কারণেই নাকি ভাতা দেওয়া হয়নি। আগের ক্যাম্পগুলোতে তিন বেলা খাবার দেওয়া হতো না, ওই সময়ে ভাতা দেওয়া হতো। একজন পিসিবি কর্মকর্তা ক্রিকইনফোকে বলেছেন, বোর্ডের নীতি নির্দেশ করে যে যদি দিনে তিন বেলা খাবার এবং হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়, তবে সে দিনের দৈনিক ভাতা দেওয়া হবে না।
তবে জাতীয় দলের ছেলেদের ক্ষেত্রে নাকি বিষয়টি ভিন্ন। বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তানের টেস্ট সিরিজের আগে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে বাবর আজমদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। একইসঙ্গে দৈনিক ভাতা দেওয়া হয়েছিল তাদের। তবে পরে জানা গিয়েছিল এই দলকে নাকি বিনামূল্যে পুরো খাবার দেওয়া হয়নি, তাই এর পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ভাতা দেওয়া হতো। তবে জানা গেছে, বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানের পুরুষ দলের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পগুলোতে সবসময়ই দৈনিক ভাতা দেওয়া হতো এবং দুই বেলা বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ হতো প্রায়শই।
ছেলে ও মেয়েদের জাতীয় দলে ভিন্ন নিয়ম কেন এ নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। এর আগে করাচিতে এপ্রিলে মেয়েদের ক্যাম্প হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাদা বলের সিরিজের আগমুহূর্তে। যেখানে পুরো তিনবেলার খাবার সরবরাহ করা হতো ফাতিমা সানা ও নিদা দারদের। একইসঙ্গে তাদের দৈনিক ভাতাও দেওয়া হয়েছিল। এরপর পিসিবি বরাদ্দ কমিয়ে কেবল তিনবেলা খাবার প্রদানের পথে হাঁটছে। যার জন্য নারী ক্রিকেটারদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেছে ক্রিকইনফো। বাড়ির বাইরে থাকাবস্থায় তারা প্রয়োজনের চেয়ে কম সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন বলেও ক্ষোভ রয়েছে। তবে একইসঙ্গে কেউ কেউ আশা করছেন আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে ভবিষ্যৎ ক্যাম্পে এই অবস্থার উন্নতি হতে পারে।
এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ভেন্যু সংস্কারে পিসিবির বড় বরাদ্দের পর থেকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য এই কাজে দশ বিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি খরচ হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। যার বড় একটি অংশ লেগে যাবে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। করাচি ন্যাশনাল স্টেডিয়ামেও বড় অর্থ খরচ করা হবে। পাশাপাশি সংস্কার কাজ চলছে রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এই তিন ভেন্যুতে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচগুলো আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে পিসিবির।