রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নাই: শেখ বশির উদ্দীন

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন বলেছেন, যে কোন উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কোন বিকল্প নাই। এরজন্য দরকার সমন্বিত উদ্যোগ। তিনি আরো বলেন, দেশে গত ১৬ বছরে বহু প্রতারণামুলক বিনিয়োগ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। গতকাল অর্থনৈতিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) আয়োজিত ‘কনডাক্টিভ অটোমাবাইল পলিসি ফর গ্রীণ গ্রোথ এন্ড কম্পিটিটিভ ইকোনমি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

সংগঠনের সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গাড়ী আমদানিকারক ও বিক্রেতাদের সংগঠন বারভিডার সভাপতি মো. আব্দুল হক। আরো বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি (বিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট আনোয়ার উল আলম চৌধুরী, উত্তরা মোটরস এর চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাাপতি রিজওয়ান রহমান প্রমুখ। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পলিসি এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী ড. মাশরুর রিয়াজ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন ইআরএফের সাধারন সম্পাদক আবুল কাসেম।

আরও পড়ুনঃ ফ্যাসিস্ট আমলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা

মূল প্রবন্ধে মাশরুর রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের লজিস্টিক (পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা) ব্যয় পৃথিবীর অন্যতম বেশি। এখন আমাদের লজিস্টিক ব্যয় অন্তত ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি। এই অতিরিক্ত ব্যয় কমাতে পারলে যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা তৈরি হবে তাতেই ২০ শতাংশ রপ্তানি বাড়বে। এই লজিস্টিকের অন্যতম উপাদান হচ্ছে উন্নত সড়ক এবং উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা। পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি গাড়ী আমদানি করতে হবে। তবে গাড়ী আমদানির ক্ষেত্রে শুধুমাত্র নতুন গাড়ী পরিবেশ বান্ধব তা টেকসই নয়। বরং উন্নত প্রযুক্তির বা দেশের তৈরি করা পুরনো গাড়ীও অনেক বছর পর্যন্ত পরিবেশ বান্ধব এবং উন্নত সেবা দেয় বলে মনে করেন তিনি।

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বিগত ১৬ বছরে আমরা এমন সব ফ্যালাসি (প্রতারণা) মুলক বিনিয়োগ করেছি, সেটা কর্ণফূললী টানেল হোক, এমন উচ্চ মূল্যের বিনিয়োগ করেছি যে ঋণের নামে আমরা মেট্রোরেল করতে যেয়ে এক টাকার জিনিসি ২০ টাকায় করেছি। আমরাতো পরিবেশের আরও বড় ক্ষতি করে ফেলেছি। এসব উন্নয়ন করতে গিয়ে আমরা যে পরিমাণ অর্থনৈতিক দায় তৈরি করেছি যার পরিমাণ আমাদের জাতীয় ব্যয়ে সর্ব বৃহৎ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক দায় পরিশোধ করতে হচ্ছে। এটাতো টেকসই নয়। দীর্ঘ মেয়াদে তো এটা চলনশীল নয়। আবার টেকসইও নয়। এখান থেকে আমাদের উত্তরণ ঘটাতে হবে আমাদের। এখান থেকে দেশের অর্থনীতিকে বের করে আনার জন্য সমন্বিত অর্থনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এমনকি এটার জন্য রাষ্ট্রীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনও ‍বিকল্প নেই বলে তিনি মনে করেন।

দেশের অর্থনীতিকে এই দায় থেকে বের করে আনার জন্য সমন্বিত বহুমূখী নীতি গ্রহণ করতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ব্যয়গুলোকে এমনভাবে করতে হবে যাতে দেশে বিনিয়োগের অনুকুল পরিবেশ তৈরী হয়। দেশের জনমিতিক সুবিধার সুফল পেতে হলে বিশেষ করে সারাদেশে সকল ধরণের পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। জনমিতিক ‍সুবিধা নেওয়ার জন্য তিনি দেশে অটোবোইল শিল্পে ব্যাপক প্রসারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান জানান।
আমাদের দেশে অন্তত দুইশটি এমন নদী রয়েছে যা দিয়ে নৌ পরিবহণের মতো সস্তা ও পরিবেশ বান্ধব উপায়ে পণ্য পরিবহণ করা যায়। দেশে পরিবেশবান্ধব সরবরাহ ও পরিবহণ ব্যবস্থা তৈরির জন্য সমন্বিত পরিবহণ নীতি গ্রহণ করতে হবে বলে জানান তিনি।
বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক বলেন, আমাদের দেশে পুরনো গাড়ী পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ব্যখা দিয়ে অতিরিক্ত আমদানি কর চাপানো আছে।
কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির তৈরি গাড়ী বিশেষ করে জাপানের মতো দেশের তৈরি পুরনো গাড়ীও অনেক বছর ধরে পরিবেশ বান্ধব থাকে। যেটা অনেক দেশের নতুন গাড়ীও দিতে পারে না। সুতরাং জাপান সহ উন্নত দেশের প্রযুক্তির তৈরি ব্যবহৃত এবং পুরনো গাড়ী আমদানি বান্ধব নীতি গ্রহণের পরামর্শ দেন বারভিডার সভাপতি। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ