জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, কোনো সাধারণ ঘটনা বা নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের বিদায় হয়নি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাদের বিদায় হয়েছে। সুতরাং, আমাদের পুনর্জন্ম হতে পারে কিন্তু আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে না। যেই নৌকা ভেঙে বঙ্গোপসাগরে চলে গেছে সেই নৌকাকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না।
শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টি ঢাকা মহানগরের আয়োজনে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
আখতার বলেন, অনেকে ভালো আওয়ামী লীগের কথা বলেন। আমরা বলি, ‘লোম বাছতে গিয়ে যেমন কম্বল উজাড় হয়ে যায়, তেমনই আওয়ামী লীগের ভালো নেতৃত্ব বাছাই করতে গেলে আওয়ামী লীগ উজাড় হয়ে যাবে।’ আওয়ামী লীগের কোনো ভালো নেতৃত্ব নেই। আওয়ামী লীগ শাপলা, পিলখানা, ২৪-এর গণহত্যাসহ অন্যান্য গণহত্যা চালিয়েছে তার দায় স্বীকার করেনি। সুতরাং তাদের পক্ষে কেউ দাঁড়ানোর চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই এদেশের মানুষের জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ৭১’র পরে তারা গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে বাকশাল কায়েম করেছিলো। এদেশের মানুষের যে গণতন্ত্র চেয়েছিলো ১৪, ১৮ ও ২৪ এর নির্বাচনে সে গণতন্ত্রের মুখে চুনকালি মেখেছে। আমাদের ভাইয়েরা জীবন দিয়েছিলো ফ্যাসিবাদী লীগের হাত থেকে মুক্ত করতে। আমাদের চোখের সামনে যারা মারা গেছে তাদের রক্তের শপথ, আমাদের শরীরে ১ ফোঁটা রক্ত থাকতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতে দেবো না। নৌকা ভেঙে বঙ্গোপসাগরে চলে গেছে। সেই নৌকাকে আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। এদেশের মানুষ মুজিববাদী আদর্শের রাজনীতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে।
এনসিপির সদস্য সচিব বলেন, অভ্যুত্থানের ৭ মাস হয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কোনো বিচারিক কাজ শুরু করেনি। আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে লীগের বিচার শুরু করতে হবে। শুধু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী না, দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগের নামে কোনো সাংগঠনিক বা রাজনৈতিক কাজ করতে দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন অল্প সময়ের মধ্যে বাতিল করতে হবে। না হলে ছাত্র-জনতা আবার রাজপথে এসে লড়াই করবে।
সব রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে চার্টার দিয়েছে, আপনারা সে চার্টারে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা উল্লেখ করুন। আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধকরণে বিষয়ে আপনাদের অবস্থান স্পষ্ট করুন।
বিক্ষোভ সমাবেশে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহিন সরকার, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক আতিক মুজাহিদ, রফিকুল ইসলাম আইনি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।