শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, কাজ করার জন্য আমাদের হাতে মাত্র তিন মাস সময় আছে। এই তিন মাসে আপনারা দেখবেন আমরা অনেক অগ্রগতি করব। এখানে দুই-একটি বিষয় থাকতে পারে যেটি স্বল্প সময় অগ্রগতি করা সম্ভব হবে না।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
সচিব বলেন, ইউএসএ থেকে একটি টিম এসেছিল। তারা বাংলাদেশে শ্রমিকদের কি পরিস্থিতি সেটা জানতে চেয়েছে।
সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কিছু রোডম্যাপ রয়েছে। এর বাইরে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ইউএসএ এর ১১ দফার একটি ইস্যু রয়েছে। ১১ দফা তারা আমাদের দিয়েছিল। এই ১১ দফা নিয়ে আমরা খুব খোলামেলা কথা বলেছি। ইউএসএ থেকে যে টিম এসেছে সেখানে ইউএস অ্যাম্বাসিসহ বেশকিছু বায়াররাও এসেছে।
সফিকুজ্জামান বলেন, ১১ দফার বাইরেও বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. ইউনূস ইউএন অ্যাসেম্বেলিতে গিয়েছিলেন। সেখানে আইএলও -এর মহাপরিচালকের সঙ্গে তার একটি মিটিং হয়েছিল। এছাড়া আমেরিকার অনেক ব্রান্ড বায়ার সেখানে তার সঙ্গে মিটিং করেছিলেন। সেই মিটিংয়ে বাংলাদেশের শ্রম আইন, লেবার রাইটসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা একটি প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলেন। গতকাল বিকেলেও লেবার ইস্যুতে প্রধান উপদেষ্টা যমুনাতে আমাদের সঙ্গে লম্বা সময় বৈঠক করেছেন। সেখানেও এই সমস্ত বিষয় উঠে এসেছে।
শ্রম সচিব বলেন, আপনারা জানেন জেনেভাতে আইএলও এর গভর্নিং বডির যে বৈঠক হয়েছিল সেখানে আমরা আইন উপদেষ্টার নেতৃত্বে গিয়েছিলাম। সেখানেও আমরা কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিলাম। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পরবর্তী গভর্নিং বডির মিটিং এর আগেই আমাদের শ্রম আইনটি সংশোধন করব। এটা প্রক্রিয়ার মধ্যে চলছে। সেখানে এই ১১ দফা এবং আইএলও এর রোডম্যাপের প্রতিফলন থাকবে।
সচিব আরও বলেন, এসব বিষয়ে আমরা এর আগে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছি। সেই বৈঠকে আমরা ১৮ দফা নিয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে এই ১১ দফাও আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়টি আজকের ইউএসএ প্রতিনিধি দল প্রশংসা করেছে। প্রধান উপদেষ্টাও এ বিষয়টি প্রশংসা করেছেন।
তিনি বলেন, এখন কাজ করার জন্য আমাদের হাতে মাত্র তিন মাস সময় আছে। এই তিন মাসে আপনারা দেখবেন আমরা অনেক অনেক অগ্রগতি করব। সেখানে দু-একটি বিষয় থাকতে পারে যেটি স্বল্প সময় অগ্রগতি করা সম্ভব হবে না। সম্প্রতি লেবার রিফর্ম কমিশন গঠন হয়েছে। এই কমিশন আমাদের কাজকে অনেকটা সহজ করে দেবে।
আন্তর্জাতিকভাবে বায়াররা ট্রেড ইউনিয়ন এবং লেবার রাইটস নিয়েই কথা বলেন উল্লেখ করে সচিন বলেন, এসব ইস্যুতে ইউএস প্রতিনিধি দল আমাদের সাপোর্ট দেওয়ার কথা জানিয়েছে। তারা বলেছে ‘আমরা একসাথে কাজ করতে চাই’। আমরা তাদের বলেছি আমরা তাদের সঙ্গে নিয়েই কাজ করব। এছাড়া ১১ দফার যে বিষয়টি আছে সেটা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। এটা তারা স্বচ্ছতার সঙ্গে করতে বলেছে। যেহেতু বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে সেহেতু আমরা আশা করছি এই কাজগুলো স্বচ্ছতার সঙ্গেই করা হবে।
তিনি বলেন, শ্রমখাতে আইএলও এর রোড ম্যাপ এবং ইউএসএ এর ১১ দফার মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য নেই। এখানে ট্রেড ইউনিয়ন, কাজের পরিবেশ এবং ওয়াশের ইস্যুও রয়েছে। আমরা যে ১৮ দফা নিয়ে কাজ করছি এই ১১ দফার মধ্যে সবকিছুই তার মধ্যে আছে।