আমদানি-রপ্তানির আড়ালে৭০-৮০ ভাগ অর্থপাচার: বিআইবিএম

দেশের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ অর্থ আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে পাচার হয় বলে জানিয়েছে গবেষণা সংস্থা বিআইবিএম। এ সময় গবেষকরা জানান, পাচারের কারণে দেশের ভাবমূর্তি বিশ্বে নষ্ট হচ্ছে। আর ব্যাংকাররা বলেন, পাচার রোধে সব সংস্থার সমন্বয়ের পাশাপাশি, অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুরে এক আলোচনায় এ তথ্য জানানো হয়।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দেড় দশকে দেশ থেকে প্রতি বছর ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ আছে। দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঋণ জালিয়াতিসহ আমদানি-রপ্তানিতে ওভার ইনভয়েসিং ও আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে এসব অর্থপাচার হয়। বিআইবিএমের আলোচনায় বক্তারা বলেন, অনেক ব্যবসায়ী ঋণ নিয়ে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়। আর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে অর্থপাচার করে থাকে। ব্যাংকাররা বলেন, পাচার রোধে নীতিমালা থাকলেও অনেকেই তা মানে না।
বিআইবিএমের গবেষক অধ্যাপক আহসান হাবীব বলেন, আমাদের মতো দেশের স্টাডি যেটা হচ্ছে সেখানে ইবিএলএমের যে পরিমাণ সেটা ৭০-৮০ শতাংশ এবং আমরাও তার ব্যতিক্রম নই। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, যখন বিএফআইয়ের রিপোর্ট তৈরি হচ্ছে এবং রিপোর্ট ইনভেস্টিগেটিং অথরিটিকে দিচ্ছে, তখনও কিন্তু স্পেসিফিক তার জন্য বলা ডিফিকাল্ট। আমি কি বলব? স্মাগলিং বলব না কোনটা বলব? এটা যখন ইনভেস্টিগেশন অথরিটির কাছে যাচ্ছে, তখন যদি কেস হয়, তাহলে এটা কোনো কোর্টে যাবে? সিভিল কোর্টে যাবে না ক্রিমিনাল কোর্টে যাবে, এটা নিয়ে একটা প্রশ্ন আছে।
এসময় ব্যাংকাররা বলেন, শুধু আইন দিয়ে অর্থপাচার রোধ করা সম্ভব নয়। আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রতিটি পণ্যের দাম ও তথ্য সঠিক ভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। বিএফআইইউয়ের পরিচালক মোস্তাকুর রহমান বলেন, যে সব পণ্যের ক্ষেত্রে ওভার প্রাইজ থাকে সেগুলো বিএফআইয়ের কাছে রেফার করা হয় তাহলে আমরা এটা নিয়ে ইনভেস্টিগেশন করতে পারি। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার বলেন, দেশের অনেক মুদ্রা পাচার হয়ে যায় সেটা আমাদের জন্য ভালো না। রিজার্ভ ও রেমিট্যান্সের অবস্থা অনেকটাই ভালো হয়ে আসছে।
অর্থ পাচারের মাধ্যমে সরকার রাজস্ব থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছে, ক্ষতির মুখে পড়ছে দেশের অর্থনীতিও। তাই, পাচার প্রতিরোধে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের তাগিদ দেন আলোচকরা।