‘আমার বাবায় চিল্লাইছে আর কইছে আম্মু হাসপাতাল এত দূরে কেন’

‘আমার বাবায় চিল্লাইছে আর কইছে, আম্মু কতক্ষণ লাগবে আর? ভাইয়া কতক্ষণ লাগবে আর? হাসপাতাল এত দূরে কেন? এত দূরে হাসপাতাল হইলে তো মানুষ মারা যাবে। কাছাকাছি হাসপাতাল বানাইতে পারলো না? আমারে তোমরা বিদেশে নিয়ে যাও চিকিৎসা করতে।’

সোমবার (২১ জুলাই) বিমান বিধ্বস্তে আহত হওয়ার পর এভাবেই আর্তনাদ করেছে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ ছামীম (১৩)। হাসাপাতলে নেয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১টার দিকে মারা যায় সে।

আরও পড়ুনঃ বাতাসে উৎকট গন্ধ, পড়ে আছে শিশুদের বই-ব্যাগ-জুতো

আব্দুল্লাহ ছামীম শরীয়তপুরের সখিপুর উপজেলার ডিএমখালী মাঝিকান্দি এলাকার মৃত আবুল কালাম মাঝির ছেলে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকালে মরদেহ গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের ডিএমখালী মাঝি কান্দিতে আনা হয়। সকাল ৯টায় ডিএমখালী চরভয়রা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার পাশে সমাহিত করা হয়। আব্দুল্লাহর এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না স্বজন ও এলাকাবাসী।

মঙ্গলবার আব্দুল্লাহর মা জুলেখা বেগম আহাজারি করতে করতে বলেন, ‘আমার বাবাটা বাঁচতে চাইছিল। কেন তাকে এভাবে চলে যেতে হলো। ওর বাবা মারা গেল সাত মাস আগে। আমি এই শোক কীভাবে সহ্য করব।’

জানা গেছে, আবুল কালাম মাঝি ও জুলেখা বেগম দম্পতির সন্তান আব্দুল্লাহ ছামীম। পরিবারের সঙ্গে ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়ী খালপাড় এলাকায় থাকত সে। ভাইবোনদের মধ্যে সবার ছোট আব্দুল্লাহর স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করলেও পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় তাকে উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি করে পরিবার। গত ডিসেম্বর মাসে সৌদিতে মারা যান বাবা আবুল কালাম মাঝি। এর সাত মাস না পেরোতেই চলে গেল পরিবারের আদরের ছোট্ট আব্দুল্লাহ।

ভেদরগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত ইউএনও মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক বলেন, একটি মর্মান্তিক ঘটনায় ঝরে গেল আব্দুল্লাহসহ অনেক শিশুর জীবন। আমরা আব্দুল্লাহর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। যে কোনো প্রয়োজনে তাদের পাশে আছি।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ