শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, গুজব ছড়িয়ে পোশাক কারখানাগুলোতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। যারা আন্দোলন উসকে দিচ্ছে তারা কোনো পোশাক কারখানায় কাজ করছে না। তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে। গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ১৩ লাখ টাকা দেওয়া হবে।’
আজ মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেশের সার্বিক আইন পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এসব কথা বলেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, ‘গতকাল শ্রমাঞ্চলে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। একজন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি। নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ১৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। আহতদের সিএমএইচে (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’
ঘটনার বিবরণ দিয়ে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘গতকালও নারী শ্রমিককে ধর্ষণ ও দুজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং ডেডবডি পড়ে আছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছিল। প্রথম গুলি ছুড়েছিল শ্রমিকদের ভেতর থেকে কোনো অনুপ্রবেশকারী। সেখান থেকেই বিক্ষোভের সূত্রপাত। পুলিশের একজন কর্মকর্তাও মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, ১৩ জন আহত হয়েছেন।’
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, ‘পুলিশ, মালিকক ও শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বকেয়া বেতন দেওয়াসহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মালিকরা বকেয়া বেতন না দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কয়েকটি কারখানার মালিকদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা বেতনও দেয়নি, আবার ব্যাংকেও ঋণ আছে। তাদের খোঁজা হচ্ছে, পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে এমন ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। যারা অনুপ্রবেশ করেছে, তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া শ্রমিক ও মালিকদের যারা ১৮ দফায় স্বাক্ষর করার পরও মানছেন না তাদের সঙ্গে কথা বলা হবে। প্রতিদিনই সমাধানের পথ খোঁজা হচ্ছে।’
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, ‘সর্বোচ্চ ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে কাজ করতে পুলিশকে বলা হয়েছে। তারা তা-ই করছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানে যাকে বুঝিয়ে বলা যায় তাকে বোঝানো হচ্ছে, প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
গতকাল সোমবার আশুলিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গেছে এক শ্রমিক। আহত হয়েছে পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে। এ ঘটনার পর থমথমে গোটা শিল্পাঞ্চল।