আ.লীগকে রাজপথে নামতে দেব না: রাশেদ খান

গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগকে রাজপথে নামতে দেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।

রোববার (১০ নভেম্বর) শহীদ নূর হোসেন দিবস উপলক্ষে বেলা ১১টায় গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

আওয়ামী লীগের নিরীহ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে রাশেদ খান বলেন, আপনারা শেখ হাসিনার ফাঁদে পা দেবেন না। রাজপথে নামার চেষ্টা করবেন না। আমরা আওয়ামী লীগকে রাজপথে নামতে দেব না। গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গতকাল ঘোষণা দিয়েছিল, তারা জিরো পয়েন্টে আমেরিকার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ছবি নিয়ে গণজমায়েত করবে। গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা সেই গণজমায়েত প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই কারণে আমরা নেতাকর্মীদের নিয়ে জিরো পয়েন্টে শহীদ নূর হোসেন চত্বরে জড়ো হয়েছি। এখানে কোনো আওয়ামী লীগ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা ঘরের মধ্যে, গর্তের মধ্যে লুকিয়েছে।

রাশেদ খান বলেন, শেখ হাসিনা যদি বাপের বেটি হতো, প্রকৃতপক্ষে শেখ মুজিবের কন্যা হতো, তাহলে এ দেশ থেকে এভাবে পালিয়ে যেত না। আজকে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে, তার প্রেতাত্মারা বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করছে। আমরা আওয়ামী লীগের দোসরদের উদ্দেশে বলতে চাই, যদি রাজপথে নামার ন্যূনতম চেষ্টা করেন, তাহলে আপনাদের দাঁতভাঙা জবাব দেবে গণঅধিকার পরিষদ। আওয়ামী লীগের ঠিকানা এ বাংলাদেশে আর হবে না।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, একটি দল এভাবে গণহত্যা চালিয়েছে। প্রায় ১৫০০ মানুষকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সেই হত্যাকারীদের এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। তাহল কী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এ গণহত্যাকারীদের প্রটেকশন দিচ্ছে? এ অন্তর্বর্তী সরকার কেন গণহত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের গ্রেপ্তার করছে না? আমাদের পক্ষ থেকে আমরা দাবি রাখছি, অনতিবিলম্বে এ গণহত্যায় জড়িত ছাত্রলীগ, যুবলীগ, পুলিশ লীগ, র‌্যাব লীগ যারাই ছিল, তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে আমরা দেখছি, এ সরকার এখনও পর্যন্ত তাদের কোনো রোডম্যাপ প্রকাশ করছে না। এ সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু এটি এ দেশের মানুষ মেনে নেবে না।

রাশেদ খান বলেন, জাতীয় পার্টি একটি ফ্যাসিবাদী দল। কিন্তু জাতীয় পার্টিকে এখনও নিষিদ্ধ করা হয়নি। এ এরশাদের নেতৃত্বে নূর হোসেনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও পর্যন্ত জাতীয় পার্টির রাজনীতিকে জিইয়ে রাখা হয়েছে৷

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা অনতিবিলম্বে একটি রোডম্যাপ প্রকাশ করুন। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু সময়ে-সময়ে, ক্ষণে-ক্ষণে, মাসে-মাসে এ সরকারের প্রতি মনোভাব পরিবর্তন করছে। প্রথম দিকে এ সরকার যখন ক্ষমতায় এলো, তখন তাদের কোনো সমালোচনা ছিল না। আজকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আইনশৃঙ্খলা এখনও পর্যন্ত সরকার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। যারা গণহত্যা করেছিল, তাদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ সরকার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছে। কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর কথা সরকার শুনছে না। আপনারা নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ করুন। যদি নির্বাচন করতে চান, তাহলে সেটি ঘোষণা দেন। আপনারা যদি মনে করে, আপনারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্ষমতায় থাকবেন, এদেশের জনগণ সেটা কখনো মেনে নেবে না।

শহীদ নূর হোসেন চত্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউসহ আশপাশের এলাকায় মিছিল করেন গণঅধিকার পরিষদের নেতারা।