ঈদের পরও ইতিবাচক ধারায় আছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আহরণ। চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১২ দিনে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১০৫ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১২ হাজার ৮৩৯ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে)। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ডলার বা এক হাজার ৭০ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি এপ্রিল মাসের প্রথম ১২ দিনে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪০ কোটি ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ২৮ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫৯ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৩ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
এপ্রিলের ১২ দিনের মতো রেমিট্যান্স আহরণের চলমান ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে আড়াই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। গত বছর এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছিল দুই বিলিয়ন ডলার।
চলতি বছরের মার্চ মাসে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। একক মাসে এত বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স আগে কখনো আসেনি বাংলাদেশে।
এর আগে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, এটা ছিল একক মাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স। তার আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৬০ কোটি ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স এসেছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ফলে হুন্ডিসহ বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে টাকা পাঠানো কমে গেছে। ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে। এ ছাড়া পবিত্র রমজান মাস চলছে। আসছে খুশির ঈদ। মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে বাড়ছে বিভিন্ন কেনাকাটা। তাই পরিবার-পরিজনের বাড়তি খরচের কথা মাথায় রেখে বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। যার কারণে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাচ্ছে বাংলাদেশ।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে এবং আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার এবং নভেম্বর মাসে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে ২৫২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। অর্থাৎ বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর টানা ৭ মাস দুই বিলিয়ন এবং মার্চে তিন বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে।