দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)-এর ২০২৫–২৭ মেয়াদের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
শনিবার (৩১ মে) সকাল ৮টায় ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেল ও চট্টগ্রামের র্যাডিসন ব্লু বে ভিউ হোটেলে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকেই ভোটারদের উপস্থিতি বেশি ছিল। র্যাডিসন হোটেল চত্বরে নিরাপত্তার কড়াকড়ি থাকলেও পরিবেশ ছিল উৎসবমুখর। নারী ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন ভোটকেন্দ্রে।
আরও পড়ুনঃ চলছে বিজিএমইএর নির্বাচন, লড়ছেন ৭৬ প্রার্থী
ভোটগ্রহণের সময় সম্মিলিত পরিষদ প্যানেলের লিডার ও চৈতি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কালাম সাংবাদিকদের বলেন, জয়-পরাজয় যেটাই হোক, আমি মেনে নেব। তবে এখন পর্যন্ত পরিবেশ খুব ভালো, সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে। ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা যদি জয়ী হই, বিজিএমইএকে সামনে এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সবাইকে নিয়েই আমরা সংগঠনের পুনর্গঠনে কাজ করব।
জানা গেছে, নির্বাচনে ৩৫টি পরিচালক পদে লড়ছেন তিনটি প্যানেলের মোট ৭৬ জন প্রার্থী। এরমধ্যে ফোরাম, সম্মিলিত পরিষদ ও ঐক্য পরিষদ নামের তিনটি জোট নির্বাচন করছে। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে ফোরাম ও সম্মিলিত পরিষদের মধ্যে। ঐক্য পরিষদ মাত্র ৬ জন প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ায় তারা কার্যত প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাইরে রয়েছে।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮৬৪ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ১ হাজার ৫৬১ জন এবং চট্টগ্রামে ৩০৩ জন ভোটার রয়েছেন। গতবারের তুলনায় এবারের ভোটার সংখ্যা প্রায় ৬০০ কম। কারণ এবার শুধু সচল কারখানার মালিকরাই ভোটাধিকার পেয়েছেন।
অন্যদিকে ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাইজিং ফ্যাশনস লিমিটেডের এমডি মাহমুদ হাসান খান। তিনি এর আগেও বিজিএমইএর সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। প্যানেল ভিত্তিক প্রচারণায় সবচেয়ে বেশি সক্রিয় ছিলেন তিনিই। নির্বাচনের আগের রাত পর্যন্ত দুই প্যানেলের মধ্যেই ছিল ব্যানার-ফেস্টুন, লিফলেট বিতরণ ও সরাসরি ভোটার যোগাযোগের ধুম।
নির্বাচন কমিশনের এক সদস্য জানান, আমরা পুরো ভোটগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করছি। এখন পর্যন্ত কোনো অনিয়মের খবর পাওয়া যায়নি। আমরা চাই, ভোটাররা তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজিএমইএর ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্ধারণ করুন।
এছাড়া, এবারের নির্বাচনকে ঘিরে বিজিএমইএর ইতিহাসে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এর আগে ২০২৪ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হয় সম্মিলিত পরিষদ। সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তর সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। কিন্তু ওই নির্বাচন নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠে। পরে তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা থাকা সত্ত্বেও দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকা নিয়ে বিতর্ক চূড়ান্তে পৌঁছায়। শেষপর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে পুরো পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নিয়োগ দেয় প্রশাসক।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।