তিন দফা দাবিতে সারাদেশে চলমান পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এক মাসের জন্য স্থগিত করেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। শিক্ষকদের দাবি আদায়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি ও আশ্বাস পাওয়ার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ছয়টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মো. শামছুদ্দিন মাসুদ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দারের সঙ্গে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে তিনি এই ঘোষণা দেন। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলে বৈঠকটি।
আরও পড়ুনঃ তিন দাবিতে কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা
দাবি মানার প্রতিশ্রুতিতে কর্মসূচি স্থগিত
বৈঠকে সহকারী শিক্ষক ঐক্য পরিষদের তিন দফা দাবি— শতভাগ পদোন্নতি বাস্তবায়ন, দীর্ঘ কর্মকালীন সেবা অনুযায়ী উচ্চতর গ্রেড প্রদান এবং সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতারা জানান, কর্তৃপক্ষ তাদের দাবি যৌক্তিক হিসেবে বিবেচনা করে বাস্তবায়নের বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছেন। পদোন্নতির বিষয়ে ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রক্রিয়া এগিয়েছে বলে জানানো হয়। পাশাপাশি, ১০ ও ১৬ বছর পূর্ণ শিক্ষকদের উচ্চতর গ্রেড প্রদানে জটিলতা নিরসনের কাজ চলছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যেই তা নিষ্পত্তি করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক পর্যায়ে সহকারী শিক্ষক পদে ১১তম গ্রেড বাস্তবায়নের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এটি দ্রুততম সময়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চূড়ান্ত করা হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়।
শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ
বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষক নেতাদের উদ্দেশ্যে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। কর্তৃপক্ষ বলেন, শিক্ষকদের দাবিগুলো যুক্তিযুক্ত এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো আন্তরিকভাবে তা বাস্তবায়নে কাজ করছে। চলমান কার্যক্রমকে সফল করার জন্য শিক্ষক নেতাদের সহযোগিতামূলক মনোভাব প্রত্যাশা করা হয়।
এরপর, শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের নেতারা আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তবে তারা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না দেখা যায়, তাহলে আবারও কর্মবিরতিসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হবে।
জানা গেছে, এই বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য মোট ১৩ জন শিক্ষককে বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। অনুমোদনপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন মো. আনিসুর রহমান (সুরিটোলা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা), নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল (ভান্ডারীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদারীপুর), শাহীনুর আক্তার (আমিরাবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেরানীগঞ্জ), শিরীন সুলতানা (বকশি বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লালবাগ), ও শামছুদ্দিন মাসুদ (কৃপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নোয়াখালী) প্রমুখ।
এছাড়া খুলনা, সিলেট, বরিশাল, যশোরসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষক প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।