এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগান ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’

এবারের পহেলা বৈশাখে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, মণিপুরি, সাঁওতাল ও গারোসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগান—নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান।

এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় যোগ দেন সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এ ছাড়াও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বিভিন্ন অংশীজন সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুন্সী শামস উদ্দিন আহমেদ জানান, মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন নিয়ে আজকের সভায় কোনো আলোচনা হয়নি। আর শোভাযাত্রার সময়সূচিতেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। মঙ্গল শোভাযাত্রাকে শুধু বাঙালিদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অনুষ্ঠানে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছি।

তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান মুন্সী শামস উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশের জাতীয় নারী ফুটবল দলও শোভাযাত্রায় অংশ নেবে বলে যোগ করেন তিনি।

এর আগে, রোববার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে সভা শেষে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছেন, নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম বদলে যেতে পারে। নতুন নাম কী হবে, সে বিষয়ে সোমবার (২৪) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

ফারুকী বলেন, এবার চারুকলা থেকে যে শোভাযাত্রা বের হবে সেখানে আপনারা সত্যিকার অর্থেই নতুন জিনিস দেখবেন। আপনাদের চোখেই পরিবর্তন দেখতে পাবেন অনেক। সেটা এখন আমরা বিস্তারিত না বলছি। সারপ্রাইজ হিসেবেই থাকল। ইটস এ টিজার। যারা অংশগ্রহণ করবেন তারা নিজেরাই নিজেদের চোখে দেখতে পারবেন পরিবর্তনগুলো কীভাবে ঘটছে।

উপদেষ্টা বলেন, আসলেই (শোভাযাত্রায়) নতুন কিছু দেখতে পাবেন। নতুন রং দেখবেন, নতুন গন্ধ পাবেন, নতুন সুর পাবেন।

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, কী নামে শোভাযাত্রা হবে, আগামীকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা সভা আছে, সেখানে সেটা ঠিক হবে।

 তিনি বলেন, এই শোভাযাত্রা প্রথমে আনন্দ শোভাযাত্রা নামে শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে হয়েছে মঙ্গল শোভাযাত্রা। যে নাম একবার পরিবর্তিত হয়েছে, সবাই যদি সর্বসম্মত হয় তবে আবার পরিবর্তন হতে পারে। আবার যদি সবাই সর্বসম্মত হয় তবে পরিবর্তন নাও হতে পারে।

সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেন, এবারের শোভাযাত্রাটি আর বাঙালির শোভাযাত্রা নয়। এ শোভাযাত্রা বাঙালি, চাকমা, মারমা, গারো, প্রত্যেকের। তাই আমাদের দেখতে হবে আমরা এমন একটা নাম না দেই যেটা শুধু আমাদেরই হয়, ওরা আর অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে। ওরা যেন ব্র্যাকেটে না পড়ে যায়।

এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, মঙ্গল শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন হলেও ইউনেস্কোর স্বীকৃতির কোনো সমস্যা হবে না। ইউনেস্কো শোভাযাত্রাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল।