জুলাই-আগস্টের গণহত্যা নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় মানহানির মামলায় সাময়িক বরখাস্ত লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) তাপসী তাবাসসুমের (ঊর্মি) বিরুদ্ধে এবার রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা হয়েছে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানির মামলাটি করেন মোল্যা শওকত হোসেন বাবু। পরে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক মো. আল আমীন মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) আবু সাঈদসহ ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম উর্মির বিরুদ্ধে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ।
পরে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) জাকির হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তাপসী তাবাসসুম উর্মিকে সশরীরে আগামী ২৮ নভেম্বর আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশ অপেক্ষমাণ রাখেন। এরপর বিকেলে মামলাটি আমলে নিয়ে উর্মিকে আগামী ২৮ নভেম্বর সশরীরে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন আদালত। বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. খাদেমুল ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদনের পাশাপাশি বলা হয়, উর্মি সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকা সত্ত্বেও শহীদ আবু সাঈদসহ ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গঠিত সরকার ও সরকারপ্রধান নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও ফেসবুকে অবমাননাকর বক্তব্য ফেসবুক লেখেন, যার মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেফারেন্সের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে গঠিত সরকারপ্রধান সম্পর্কে বিষোদ্গার করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনি সরকার উৎখাতের হুমকি দিয়ে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করেছেন।
গত ৫ অক্টোবর লালমনিরহাট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার তাপসী তাবাসসুম উর্মির ফেসবুকে এক পোস্টে আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে লেখেন, ‘কত বড় বোকার স্বর্গে আছি, এইটা শুধু চিন্তা করি। আবু সাইদ! বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, সন্ত্রাসী একটি ছেলে, যে কি না বিশৃঙ্খলা করতে গিয়ে নিজের দলের লোকের হাতেই মারা পড়ল; সে নাকি শহীদ! এটাও এখন মানা লাগবে!’
এরপর তুমুল জনরোষের মুখে ৬ অক্টোবর উর্মিকে ওএসডি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। পরে তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।