এ কে খান ফুড বেভারেজের চেয়ারম্যানের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দাবি

আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে ঢাকার এ কে খান ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চেয়ারম্যানসহ শীর্ষকর্তাদের পাসপোর্ট বাতিল ও বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দাবি জানিয়েছেন নাটোরসহ আশে পাশের ছয় জেলার ১১ জন ডিলার।

প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হাসান শরীফ খান রাজুকে জামিন না দেওয়ার আবেদনসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বাতিল ও বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে নাটোর শহরের সাহারা প্লাজা মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এই দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে এ কে খান ফুড অ্যান্ড বেভারেজের পরিবেশক (ডিলার) নাটোরের হাফিজ গাফফার ও আবু বকর সিদ্দিক, রাজশাহীর মনিকা চৌধুরী, আবু রায়হান ও মনিরুল ইসলাম, বগুড়ার আতাউর রহমান, টাঙ্গাইলের আব্দুল মামুন ও নাসির উদ্দিন, রংপুরের রাসেল হোসেন, নওগাঁর শাজাহান আলী ও জিতেন্দ্রনাথ দাস উপস্থিত ছিলেন।

নাটোরের পরিবেশক হাফিজ গাফফার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, এ কে খান ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চেয়ারম্যান হাসান শরীফ খান, ভাইস চেয়ারম্যান এম এ আনোয়ার হোসেন, মার্কেটিং হেড জলি হোসেনসহ শীর্ষ কর্মকর্তাগণ চার বছর আগে তাদের সাথে ব্যবসার প্রস্তাব দেন। পরে তারা তাদের আস্থা ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল সরবরাহ করার চুক্তিতে ২ কোটি ৫৮ লাখ ৬২ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। কিন্তু আজ কাল করে তারা আর তেল সরবরাহ করেন না এবং টাকাও ফেরত দেন না। কিছু ব্যবসায়ীকে চাপাচাপির কারণে টাকার পরিবর্তে চেক প্রদান করলেও উল্লেখিত হিসাবে টাকা না থাকায় চেক প্রত্যাখান হয়। এমন অবস্থায় তারা বিভিন্ন জেলার আদালতে ওই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পিবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে তাদের অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ী হাফিজ গাফফার আরও জানান, নাটোর আদালতে দায়ের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হাসান শরীফ খান রাজুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তিনি আদালতে হাজির হয়ে পরের তারিখের মধ্যে টাকা পরিশোধ করার শর্তে জামিন গ্রহণ করেন। কিন্তু আপোষ বা টাকা পরিশোধ না করায় পরের তারিখে (২৬ ফেব্রুয়ারি) আদালত তার জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠান। বর্তমানে তিনি নাটোর কারাগারে বন্দি রয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এসব ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, কোম্পানির চেয়ারম্যান জামিনে মুক্ত হলে তিনি দেশ ছেড়ে পালাবেন। তার বিরুদ্ধে দেশের অন্যান্য জেলায় আরও অন্তত ২০টি মামলা রয়েছে। তিনি একই কায়দার দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে শত কোটিরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ফলে তারা সরকারের কাছে এই কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট বাতিল করার দাবি জানান। একই সাথে তাদের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানান।

অভিযুক্ত হাসান শরীফ খানের নাটোরে নিযুক্ত আইনজীবী এরশাদুল হক শ্রাবণ জানান, তার মক্কেল ইতোমধ্যে উক্ত কোম্পানি থেকে তার সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই তার পক্ষে পাওনাদারদের দাবি মেটানো সম্ভব না। তবে বর্তমান মালিকদের সাথে তিনি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।