গণতান্ত্রিক, ন্যায়ভিত্তিক ও জবাবদিহিমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠায় গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) সবসময় সচেষ্ট থেকেছে। সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মনন সৃষ্টিতে সিপিডির গবেষণা ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম অশেষ ভূমিকা রেখেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) ঢাকায় সিপিডির ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা একথা বলেন।
বিগত ৩০ বছর ধরে বিভিন্নমুখী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সিপিডি দেশের মানুষের কাছে নির্ভরযোগ্য এবং নির্ভীক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ কারণে এ প্রতিষ্ঠানটি সবসময় আমার কাছে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।
বাংলাদেশ এখন গুরুত্বপূর্ণ সময় অতিক্রম করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা আরো বলেন, আমি আশা করি সিপিডি অতীতের মতো বর্তমানে ও আগামীতে তার বুদ্ধিবৃত্তিক অবদান অব্যাহত রাখবে এবং দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে অবদান রেখে যাবে। আগামীদিনগুলোতে দেশের প্রয়োজনে সিপিডির অধিকতর ভূমিকা ও সাফল্য কামনা করেন তিনি। সিপিডির একজন প্রতিষ্ঠাকালীন ট্রাস্টি হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস সংস্থাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আজ বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই সিপিডির প্রতিষ্ঠাতা আমার শিক্ষক অধ্যাপক রেহমান সোবহানকে। তিনি দেশের বিভিন্ন সময়ে তার ব্যাতিক্রমী ভূমিকা রেখে চলেছেন। ’
৩০ বছরের দীর্ঘযাত্রায় দেশে এবং দেশের বাইরে সিপিডি একটি স্বনামধন্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে উল্লেখ করে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, ‘সিপিডি সব সময় স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে স্বাধীন ভাবে চিন্তা করেছে এবং দেশের স্বার্থে বিভিন্ন সময়ে নীতি নির্ধারকদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয়ার চেষ্টা করেছে। দেশের সাধারণ মানুষের সামগ্রিক অবস্থার পরিবর্তন এবং দারিদ্র দূরীকরণের যে চেষ্টা আমি সারা জীবন ধরে করেছি সিপিডির কাজে সব সময় তার প্রতিফলন দেখেছি। ’
তিনি বলেন, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সিপিডি বিভিন্ন সময়ে নিয়মিত নীতি সংলাপের আয়োজন করে, যার অনেকগুলোতে আমি ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকেছি। তাদের নীতি-বিশ্লেষণ ও গবেষণা কার্যক্রম দেশের সার্বিক চিন্তা কাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এর আগে সম্মেলনের প্রথমার্ধে সিপিডর কার্যক্রম নিয়ে উপস্থাপনকালে ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সিপিডি তার সিদ্ধান্তে অনড়। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে কাজ করে যাচ্ছে সংস্থাটি। শুরু থেকেই কালো টাকা সাদা করার পক্ষে মত দেয়নি সিপিডি। এখনো সেই সিদ্ধান্তে অনড়। প্রেজেন্টেশন উপস্থাপনকালে তিনি বলেন, সিপিডির অনেক গবেষণা কার্যক্রম পর্যালোচনা সরকার উন্নয়নে কাজ করেছে। পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করেছে। সেই সঙ্গে অনেক পলিসি মেকিংয়েও সহায়তা করেছে।
সম্মেলনে সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের মেম্বার রাশেদা চৌধুরী বলেন, অর্থনীতির গবেষণার পাশাপাশি রেমিট্যান্স নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। কিভাবে আয় ব্যয় হয় সেই হিসাবটা জরুরি।
তিনি বলেন, দেশে অনেক মানুষ রয়েছে যারা কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চায়। কিন্তু সঠিক পথ খোঁজে পায় না। সেই সঙ্গে আস্থাহীনতায় ভোগে। যার ফলে অনেকে বিনিয়োগকারীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।