গত ৯ বছরে ঢাকার মানুষ নির্মল বাতাস পেয়েছে মাত্র ৩১ দিন

গত ৯ বছরে ঢাকার মানুষ মাত্র ৩১ দিনের জন্য স্বচ্ছ ও নির্মল বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে পেরেছেন। ২০২৪ সালে অবস্থাটা আরও উদ্বেগজনক ছিল। পুরো বছরে মাত্র ২ দিন বায়ুমান ছিল সন্তোষজনক, আর ৩৫ দিন ছিল চরম দূষণের আওতায়।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ‘বিশ্ব ধরিত্রী দিবস-২০২৫ : বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে করণীয়’ বিষয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)।

পরিবেশ বাঁচাতে ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় বায়ুদূষণ মোকাবিলায় ৮টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ দিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজ (ক্যাপস)।

তাদের প্রস্তাবনায় রয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করা, বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড গাড়ির ব্যবহার বাড়ানো, বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ করা, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া, একটি আধুনিক ও কার্যকর নির্মল বায়ু আইন প্রণয়ন করা।

এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হলে শহরাঞ্চলে বায়ুদূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন প্রফেসর ক্যাপসের য়োরম্যান ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার। তিনি বলেন, শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলেই নির্মল বায়ু নিশ্চিত পাওয়া সম্ভব।

বায়ুদূষণ পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন সময়ের তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে সেন্টার ফর পলিসি স্টাডিজ (ক্যাপস)। এতে সবচেয়ে দূষিত জেলার তালিকায় গাজীপুরকে শীর্ষে রাখা হয়।

বিশ্লেষণে বলা হয়, গত ৯ বছরে ঢাকায় বায়ুমান ভালো ছিল মাত্র ৩১ দিন। বাকি সময় প্রায় সব দিনেই জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মাত্রার দূষণ ছিল। বিশ্লেষণ অনুযায়ী, এ সময় ঢাকায় ৬২৪ দিন বায়ু ছিল মাঝারি মানের, ৮৭৮ দিন সংবেদনশীলদের জন্য অস্বাস্থ্যকর, ৮৫৩ দিন অস্বাস্থ্যকর, ৬৩৫ দিন খুব অস্বাস্থ্যকর ও ৯৩ দিন ছিল দুর্যোগপূর্ণ দূষণের আওতায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশে আরও ভয়াবহ প্রভাব পড়তে পারে।