উচ্চ তাপমাত্রায় দিশেহারা শহুরে জনজীবন। রোদের দাপটে বাইরে বের হলেই শরীরে ক্লান্তি, অস্বস্তি, সঙ্গে পানিশূন্যতার ঝুঁকিও বাড়ছে। এই সময় ডাবের পানি বা লেবুর পানি একটু স্বস্তি দেয় নিঃসন্দেহে। কিন্তু প্রশ্ন হল—এই গরমে কোনটি বেশি উপকারী? কাদের জন্য কোনটি উপযুক্ত?
ডাবের পানি: প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইটে ভরপুর
কচি ডাবের মিষ্টি পানি শুধু পিপাসাই মেটায় না, শরীরকেও চাঙ্গা করে তোলে। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ও ম্যাগনেশিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ, যা শরীরে ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অতিরিক্ত ঘাম বা পরিশ্রমের পর ক্লান্তি দূর করতে ডাবের পানির জুড়ি নেই।
ফ্যাটমুক্ত ও লো ক্যালরি: ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আদর্শ।
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ: শরীরকে সতেজ করে, ক্লান্তি ও ঝিমঝিম ভাব দূর করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ও হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
তবে কিডনির সমস্যা, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ডাবের পানি না খাওয়াই ভাল। এতে থাকা অতিরিক্ত পটাশিয়াম শরীরে খনিজের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে।
লেবুর পানি: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ডিটক্স পানীয়
লেবুর পানি শরীরকে টক্সিনমুক্ত রাখতে দারুণ কার্যকর। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, যা শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই বাড়ায় না, বরং তাপ থেকে শরীরকে রক্ষাও করে।
হজমে সহায়তা করে ও পেট ঠান্ডা রাখে।
হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মেশানো পানি ওজন কমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে সকালে খালি পেটে খেলে।
খারাপ কোলেস্টেরল কমায়, হার্ট ও কিডনির জন্য ভাল।
তবে যাদের গ্যাস-অম্বল বা অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তারা খালি পেটে লেবুর পানি খাওয়া এড়িয়ে চলুন। দাতের সংবেদনশীলতা, ত্বকের অ্যালার্জি বা কিডনির সমস্যা থাকলে লেবুর পানি খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।
কোনটি কখন খাবেন?
ডাবের পানি খেতে হবে যখন: রোদে বাইরে কাটিয়ে এসেছেন, ক্লান্ত লাগছে, বা শরীরে পানিশূন্যতার উপসর্গ দেখা দিয়েছে এ অবস্থায় ডাবের পানি খুবই উপকারী।
লেবুর পানি খেতে পারেন যখন: গরমে শরীর তরতাজা করতে চান, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, বা হজমে সহায়তা দরকার।
দু’টি পানীয়ই গরমের দিনে শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। চাইলে সকালে খালি পেটে লেবুর পানি আর বেলা বাড়লে ডাবের পানি খেতে পারেন—তাতে ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে, আবার পানিশূন্যতার ভয়ও থাকবে না।
চাহিদা অনুযায়ী ঠিক বেছে নিন। ডাবের পানি হোক বা লেবুর পানি, শরীর সুস্থ রাখাটাই আসল।