গাজীপুরের শ্রীপুরে তাকওয়া পরিবহনের স্টাফ কর্তৃক অটোরিকশা চালককে হত্যার প্রতিবাদ ও পুলিশ মামলা নিতে গড়িমসি করায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন অটোরিকশা চালকরা।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল থেকে শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন অটোরিকশা চালক ও স্থানীয়রা। মহাসড়ক অবরোধ থাকায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়। পরে প্রায় চার ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নিহত অটোরিকশা চালক মো. লিটন মিয়া (৩৫) পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের মাধখলা গ্রামের মো. দুলাল মিয়ার ছেলে। তিনি একজন অটোরিকশা চালক।
নিহতের স্ত্রী শরমিন বেগম বলেন, গতকাল বিকেলে গড়গড়িয়া মাস্টার বাড়ি এলাকায় তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসের স্টাফের সঙ্গে আমার স্বামীর বাগবিতণ্ডা হয়। এরপর তাকে তাকওয়া পরিবহনের স্টাফরা জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তুলে নেওয়ার দু’ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে আমার স্বামীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে স্বামীর হাত-পায়ের রগ টাকা রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পাই।
নিহতের ছোট ভাই মো. আজিজুল অভিযোগ করে বলেন, ভাইকে তুলে নিয়ে হাত ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে। আমরা থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে গড়িমসি শুরু করে। রাতভর থানায় অবস্থান করেও মামলা নেয়নি পুলিশ। আমার ভাইকে ধারালো অস্ত্রে আঘাতে খুন করলো অথচ মামলা করার পরামর্শ দেন সড়ক দুর্ঘটনা। এজন্য স্থানীয় বাসিন্দা ও অটোরিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করে।
অটোরিকশাচালক মহসিন বলেন, তাকওয়া পরিবহনের বাসের স্টাফরা করতে পারে না এমন কোনো অপরাধ নেই। একজনকে খুন এটা তো তাদের জন্য খুবই সামান্য কাজ। ওরা বাসের নারীদের ধর্ষণ করতে পারে। শিশুদের ধর্ষণ করতে পারে। আমাদের একজন চালককে তুলে খুন করলো অথচ মামলা নিচ্ছে না।
পরে দুপুর ১২টার কিছু সময় আগে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের সমন্বয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে বিচারের আশ্বাস দেন। তাৎক্ষণিকভাবে মামলাসহ আসামি গ্রেপ্তারের ঘোষণা দেওয়ায় তারা অবরোধ তুলে নেন।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, ইতিমধ্যে তিনজনের নাম উল্লেখ করে শ্রীপুর থানায় মামলা রুজু হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।