‘সমন্বিত কৃষি কার্যক্রমকে গো গ্রীন সেন্টারের অধীনে পরিবেশসম্মত কৃষি উদ্যোগ হিসেবে পরিচালনার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে ওয়েভ ফাউন্ডেশন তা একটি কার্যকর মডেল হিসেবে স্থানীয় প্রেক্ষিতকে বিবেচনায় নিয়ে অন্যান্য অঞ্চলেও বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। এখানে একইসাথে শস্য প্রদর্শনী প্লট, মৎস্য খামার এবং ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ও দুম্বা প্রজনন খামার পরিচালিত হচ্ছে সহজপ্রাপ্য দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে ও পরিবেশসম্মত উপায়ে, যা থেকে স্থানীয় কৃষক ও খামারিরা উৎসাহিত হচ্ছেন এবং নিজস্ব কৃষিকাজের ক্ষেত্রে এসব পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। এ কার্যক্রমকে বেগবান করার কাজে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর পপুলার কো-অপারেশন (আইএপিসি), বাওবাব ওয়েভ ফাউন্ডেশনের পাশে থাকার চেষ্টা করবে।’ বুধবার (২২ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গার কোষাঘাটায় অবস্থিত ওয়েভ ফাউন্ডেশনের গো গ্রীন সেন্টার পরিদর্শনকালে আইএপিসি, বাওবাব-এর প্রতিনধিদলের সদস্যরা এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন আইএপিসি বায়োইনপুট টিমের সদস্য এবং চায়না এগ্রিাকালচার ইউনিভার্সিটির অতিথি গবেষক ও ইউনিভার্সিটি অফ ব্রাজিলের অধ্যাপক ক্যারোলাইন সিকুইরা গোবাইড, আইইপিসির ল্যাটিন আমেরিকান সমন্বয়কারী লুইজ হেনরিক গোমেজ ডি মোউরা এবং আইপিসি, বাওবাব এর বোর্ড মেম্বার প্রমেশ পোখরেল। গো গ্রীন সেন্টারে এ প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। এছাড়াও গো গ্রীন সেন্টার ও কৃষি-খাদ্যব্যবস্থা রূপান্তর কার্যক্রমের সাথে জড়িত সংস্থার অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েভ গো গ্রীন সেন্টারে ঘণ্টাখানেক অবস্থানের সময় প্রতিনিধিদলটি একে একে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল প্রজনন খামার, কৃষি প্রদর্শনী প্লট, মৎস্য খামার প্রদর্শনী প্লট, সমন্বিত কৃষি ইউনিট, দুম্বা প্রজনন খামার, বীজ সংরক্ষণাগার ঘুরে দেখেন এবং প্রত্যেকটি বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের সকল প্রশ্নের সদুত্তর প্রদান করেন। পরিদর্শন শেষে সংস্থার পক্ষ থেকে নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী প্রতিনিধিদলের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন।
একইদিন সকালে মেহেরপুরের বারাদীতে অবস্থিত ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ভেড়ার খামার পরিদর্শন করেন। গো গ্রীন সেন্টার পরিদর্শন শেষে দামুড়হুদার পুরাপাড়া, মদনা, পারকৃষ্ণপুর এলাকায় কৃষকদের দ্বারা পরিচালিত ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল ক্লাস্টার, ট্রাইকম্পোস্ট ক্লাস্টার, ফল উৎপাদন ক্লাস্টার, পেকিং হাঁস ভ্যালু চেইন হাব, ধান চাষ, মাছ চাষ প্রভৃতি কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লিষ্ট কৃষক ও খামারিদের সাথে কথা বলেন। এছাড়াও ছয়ঘড়িয়ায় স্থানীয় কৃষি মোর্চা সদস্যদের সাথে মতাবিনিময় করেন।
গ্রো গ্রীন ও পরিবেশসম্মত কৃষি কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে বিদায়ের সময় প্রতিনিধিদলটি ওয়েভ ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগগুলোকে অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং স্থানীয় কৃষক ও পরিবেশের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন এবং একে আরো প্রসারিত করার পরামর্শ প্রদান করেন। এখান থেকে ফিরে গিয়ে তারা আইএপিসি, বাওবাব টিমের অন্যান্য সদস্যদেরকে সাথে নিয়ে নির্ধারণ করবেন, উদ্যোগগুলোর কোন কোন ক্ষেত্রে তারা অবদান রাখতে পারবেন বা কোন শিক্ষণীয় দিকগুলো তারা অন্য অঞ্চলে বাস্তবায়ন করতে পারবেন। উল্লেখ্য, আইপিএসি, বাওবাব হচ্ছে সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যারা পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মানুষকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে সামাজিক ও পরিবেশসম্মত কৃষির উন্নয়নে কাজ করে
