নারীর ওপর সহিংসতা একরকম সামাজিক ব্যধিতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপেও এমন প্রমাণ মিলেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশের সমন্বয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তুলে ধরা নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ-২০২৪ এ দেখা গেছে, জীবনে একবার হলেও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দেশের ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ নারী। এর মধ্যে শুধু যৌন নির্যাতনের হার ২৯ শতাংশ।
জরিপ অনুযায়ী, গ্রামের চেয়ে যৌন নির্যাতনের হার বেশি শহরাঞ্চলে। শহরে যৌন নির্যাতনের হার যেখানে ৩১ দশমিক ১ শতাংশ এবং সেখানে গ্রামে এ হার ২৮ শতাংশ। অবশ্য, সার্বিকভাবে নারী নির্যাতনের হার গ্রামে ৭৬ শতাংশ এবং শহরে ৭৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
এছাড়া, বিভাগওয়ারী নারী নির্যাতনের হার সবচেয়ে বেশি বরিশালে; ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ। শুধু তাই নয়, বিশেষভাবে যৌন নির্যাতনের হারও সবচেয়ে বেশি এ বিভাগে। জরিপ অনুসারে, বিভাগটিতে যৌন নির্যাতনের হার ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ।
২০১১ এবং ২০১৫ সালের জরিপের পর তৃতীয়বারের মতো ২০২৪ সালের নারীর প্রতি সহিংসতার এই জরিপটি বাংলাদেশে নারীর প্রতি সহিংসতার প্রকৃতি, মাত্রা এবং প্রভাব সম্পর্কে সবচেয়ে বিস্তৃত এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের প্রকৃত চিত্র উপস্থাপনকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন।
এতে দেখা গেছে, বরিশালের পরেই যৌন নির্যাতন বেশি হয় চট্টগ্রাম বিভাগে; ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়া খুলনায় ২৯ দশমিক ৯, ঢাকায় ২৭ দশমিক ৮, রাজশাহীতে ২৭ দশমিক ২, ময়মনসিংহে ২৩ শতাংশ, রংপুরে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ, ও সিলেটে যৌন নির্যাতনের হার ২৮ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া শহরে যৌন নির্যাতনের হার ৩১ দশমিক ১ এবং গ্রামে ২৮ শতাংশ।
গত ১২ মাসেও যৌন নির্যাতন বেশি হয়েছে বরিশালে। জাতীয় পর্যায়ে গত মাসে দেশে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৯ দশমিক ৪ শতাংশ নারী। সেখানে বরিশালে এর হার ১৩ দশমিক ২ শতাংশ। এর পরেই গত ১২ মাসে যৌন নির্যাতন বেশি হয়েছে চট্টগ্রামে ১১ দশমিক ২ শতাংশ।
এছাড়া গত ১২ মাসে ঢাকায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশ, খুলনায় ৯ দশমিক ১ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, রাজশাহীতে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, রংপুরে ৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং সিলেটে ১০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। গত ১২ মাসে গ্রামে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং শহরে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।