মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) এর পৃথিবীতে আগমন ও ওফাতের দিন ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম নগরীতে জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়েছে। জশনে জুলুসের শোভাযাত্রা লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আনজুমান-এ-রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের উদ্যোগে নগরীর মুরাদপুর-ষোলশহরের জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে শোভাযাত্রা বের হয়।
১৯৭৪ সাল থেকে প্রতিবছর ১২ রবিউল আউয়াল আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম নগরীতে এ জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবার ছিল ৫২তম জশনে জুলুস।
৫২তম এ জশনে জুলুসে নেতৃত্ব দেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবের শাহ। অতিথি হিসেবে ছিলেন শাহজাদা সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাসেম শাহ।
এদিকে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লোকজন জামেয়া ময়দানে এসে জড়ো হতে থাকেন। চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা লোকজন বিবিরহাট, মুরাদপুর থেকে জুলুসে যোগ দেন।
জুলুস শুরুর আগে খানকায়ে কাদেরীয়ায় মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবের শাহ।
জুলুসটি বিবিরহাট হয়ে মুরাদপুর, মুরাদপুর ট্রাফিক পুলিশ বক্স থেকে ডান দিকে মোড় নিয়ে ষোলশহর, দুই নম্বর গেট, জিইসি মোড় ঘুরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জামেয়া মাদ্রাসা মাঠে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় আসসালাতু আসসালামু আলাইকা ইয়া রাসুলল্লাহ’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছিল পুরো বন্দর নগরী। এ সময় হামদ, নাত, তাকবির, দরুদ শরিফে মুখরিত ছিল নগরীর সড়কগুলো। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ মোটরসাইকেলে আবার কেউ ট্রাক কিংবা পিকআপের ওপর চেপে জুলুসে অংশ নেয়।
এ সময় শরবত, কমলা, চকলেট, পাউরুটি, খাবার পানিসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী অংশগ্রহণকারীদের বিতরণ করতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জুলুসকে ঘিরে নগরীর বিভিন্ন সড়কে ভাসমান মেলা বসেছে। এতে টুপি, মেসওয়াক, তসবিহ, ইসলামি বই, আতর, পতাকা, পাঞ্জাবি, পাজামা, জুতো বিক্রি হচ্ছে। কেউ কিনছেন তো আর কেউ কেউ সেগুলো নাড়িয়ে দেখছেন।
এদিকে জশনে জুলুসের শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে বন্দর নগরী নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল। মোড়ে মোড়ে মোতায়েন ছিল পুলিশ।
নগর পুলিশের উপ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তর) জয়নুল আবেদীন বলেন, জুলুস চলাকালে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগর পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন ছিল। যেসব জায়গা দিয়ে জুলুসের শোভাযাত্রা গেছে ওদিকে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডাইভারশন দিয়ে সড়ক সচল ছিল। জুলুস শেষ হওয়ার পর সেগুলো তুলে নেওয়া হয়েছে।