চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ সমন্বয়কের পদত্যাগ

সমন্বয়কদের মাঝে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একজন সমন্বয়ক ও চার সহ-সমন্বয়ক পদত্যাগ করেছন। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা পদত্যাগ করেন।

পদত্যাগকারীরা হলেন সমন্বয়ক সুমাইয়া শিকদার এবং সহ-সমন্বয়ক আল মাসনূন, ধ্রুব বড়ুয়া, ঈশা দে ও সাইদ্যুজামান রেদোয়ান।

লিখিত বক্তব্যে সহ-সমন্বয়ক আল মাসনূন বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সফল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব স্বৈরাচারের পতন করলেও পরে নানা ধরনের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে সমন্বয়কেরা জবাবদিহি করছে না এবং নানা ধরনের সাফাই দিচ্ছেন যা অনেকাংশেই একপাক্ষিক। প্রথম থেকেই যেসব সমন্বয়হীনতা ও অপরাজনীতির আভাস পেয়েছি, আমরা সেগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছি।’

মাসনূন বলেন, প্রক্টর ও প্রভোস্টদের পদত্যাগের যৌক্তিকতা ও অযৌক্তিকতার বিষয়ে নানা ধরনের বিতর্ক উঠে আসছিল। আমরাও তাঁদের পদত্যাগ চেয়েছ, কিন্তু সেটা ধাপে ধাপে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আগমন, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সকল প্রকার লেজুড়বৃত্তিক ও দখলদারী দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের ব্যবস্থা করেই যেন ভিসি পদত্যাগ করেন। কিন্তু কোনো মতামতকে যাচাই না করেই সমন্বয়কেরা ক্যাম্পাসের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে ফেলে। শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে সমালোচনার সঠিক কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি সমন্বয়ক কমিটিতেও।

এই সহ-সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘আন্দোলনের সময়ে চবির সমন্বয়ক সংখ্যা ছিল ২২ জন। কিন্তু পরে ৫ আগস্ট চবিতে সমন্বয়ক সদস্য সংখ্যা হয় ৩০ জন। নতুন যে কয়জন কমিটিতে যুক্ত হয়েছে তাঁদের নিয়েও মূল সমন্বয়কেরা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি। এমন সব ঘটনা, ফ্যাসিস্ট বয়ান আমাদের মনে স্বাভাবিক প্রশ্নের জন্ম দেয়।’

এক প্রশ্নের জবাবে আল মাসনূন বলেন, ‘সমন্বয়কদের কাজ হলো সব শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে কাজ চালিয়ে যাওয়া। তবে সমন্বয়কেরা সেটা না করে চট্টগ্রামে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছে। আজও চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আলোচনা সভা আছে, আমরা সেটা বর্জন করেছি।’

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘আমরা সব সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের মতামতের ওপর ভিত্তি করে নিয়ে আসছি, এখনও নিচ্ছি। এখানে সবকিছুই পরিষ্কার। কেউ ব্যক্তিগত অপারগতা প্রকাশ করে পদত্যাগ করলে আমরা জোর করতে পারি না। সমন্বয়ক কমিটিতে অনেকেই নিরাপত্তার জন্য আসতে চায়নি বলে তাঁদেরকে কমিটি থেকে আমরা বিলুপ্ত করতে বাধ্য হয়েছি। যারা সাহস করে এগিয়ে এসেছে তাদের নিয়ে বর্তমান সমন্বয়ক কমিটি। এটা নিয়ে কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়।’

সহ–সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফি রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেছেন, অনিবার্য কারণে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ প্রতিনিধি টিম স্থগিত করা হয়েছে। কেউ সমন্বয়ক সেজে চাঁদাবাজি বা অনৈতিক কিছু যাতে করতে না পারে সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকারও আহ্বান জানান তিনি।