দেশের শেয়ারবাজারে দরপতন অব্যাহত রয়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে শেয়ারবাজারে ঢালাও দরপতন হয়েছে। এতে সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার ছয়গুণের বেশি প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। এতে সবকয়টি মূল্যসূচকের বড় পতন হওয়ার পাশাপাশি কমেছে বড় অঙ্কের বাজার মূলধন। এর মাধ্যমে টানা ছয় সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকলো দেশের শেয়ারবাজার।
ছয় সপ্তাহের এই টানা পতনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ২৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে গত সপ্তাহে কমেছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
অব্যাহত দরপতনের মধ্যে গত সপ্তাহের সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। কিন্তু পরের তিন কার্যদিবস ঢালাও দরপতন হয়। এতে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৫০টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৩২২টির। এছাড়া ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকায় ৬ দশমিক ৪৪ গুণ বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
এমন পতন হওয়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৪৯ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে যা ছিল ৬ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা বা শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ। আগের পাঁচ সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ২১ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। ফলে ছয় সপ্তাহের টানা পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমলো ২৪ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন কমার পাশাপাশি গত সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ১২১ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অপর দুই সূচকের মধ্যে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৩৫ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২৯ শতাংশ। এছাড়া বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে কমেছে ৫০ দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
মূল্যসূচকের বড় পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩২৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৮৩ কোটি ১২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ১৫৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৩২ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বিচ হ্যাচারির শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক ৩৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ১৮ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, কেডিএস এক্সেসরিজ এবং ফাইন ফুডস।