মৌসুমের শেষের দিকে নানা উৎসব ঘিরে বেচাকেনা শেষ করেছেন দেশের ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের গদখালীর ফুল চাষিরা। প্রতিবছর এ অঞ্চলের প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ফুলচাষি বুদ্ধিজীবী দিবস, বিজয় দিবস, ইংরেজি নববর্ষ, বসন্ত, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে ফুল বেচাকেনা করে থাকেন। এই দিবসগুলোকে ঘিরেই সারাবছরের পরিচর্যা করা ও উৎপাদিত ফুল বিক্রির মৌসুম চলে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে আজ বৃহস্পতিবারের বাজারে (২০ ফেব্রুয়ারি) মৌসুমের শেষ বেচাকেনা করেছে গদখালীর ফুলচাষি ও পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
গদখালির ফুলচাষিরা জানান, মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরে গত তিন চার দিনে ফুলের ঊর্ধ্বমুখী দাম পেয়েছেন তারা। দুই সপ্তাহ আগে যে গ্লাডিওলাস পানির দামে বিক্রি করছিলেন তা এখন ৮ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। প্রতি হাজার ৩০০ টাকা মূল্যের গাঁদা ফুল বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১৩০০ টাকা দামে, জিপসি ও কামিনি পাতা প্রতি মুঠো ২০ টাকা, জারবেরা ৭-৮ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা ২-৩ টাকা। তবে দাম নিম্নমুখী থাকায় মুখে হাসি কম গোলাপ চাষিদের মুখে। বৃহস্পতিবারের বাজারে প্রতি পিস গোলাপ বিক্রি হয়েছে ২ থেকে ৩ টাকা। তবুও গোলাপ চাষিদের দাবি সারা বছরের তুলনায় লাভেই আছেন তারা।
পানিসারা গ্রামের ফুলচাষি ইব্রাহিম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি আড়াই বিঘা জমিতে গাদা ফুলের চাষ করেছিলাম। গত তিন দিন ধরে ভালোই দাম পেয়েছি। গত সপ্তাহেও হাটভাঙা দাম ছিল গাদা ফুলের। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে আজকের বাজারে প্রত্যাশার তুলনায় বেশি দাম পেয়েছি।
গোলাপচাষি সোলাইমান বিশ্বাস বলেন, দুই বিঘা জমির গোলাপ বাজারে নিয়ে গত ভালোবাসা দিবসকে ঘিরে ভালো দাম পেয়েছি। তবে ভালোবাসা দিবস পার হয়ে যাওয়ার পর গোলাপের দাম একেবারেই কমে গেছে। তবুও আগের বাজারগুলোর হিসাবে মোটামুটি লাভ হয়েছে।
গদখালী ফুল চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে আজকের বাজারে চাহিদা মতো দাম পেয়েছেন ফুল চাষিরা। গত তিন দিন ধরেই বাজার চড়া। আশানুরূপ দাম পাওয়ায় চাষিরা খুশি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের উৎসব কেন্দ্রিক ফুল ব্যববসার মৌসুম শেষ হচ্ছে। গত ডিসেম্বর থেকে আজ অবধি পুরো মৌসুমে অন্তত দেড়শ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করছেন চাষিরা। তবে এটা গত মৌসুমের তুলনায় কম। তারপরও চাষিরা লাভেই থাকবেন বলে আশাবাদী।