ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু-কাশ্মীরের হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে ৬ শ্রমিক ও এক চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। রোববার রাতে অঞ্চলটির গান্দেরবাল জেলায় এই হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। তারা একটি বেসরকারি কোম্পানির ক্যাম্প হাউজিং শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায়। গুন্ড নামক এলাকায় একটি টানেল নিমার্ণের কাজ করছিলেন ওই শ্রমিকরা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
এতে বলা হয়, ওই ক্যাম্পে স্থানীয় এবং অস্থানীয় উভয় পক্ষকে লক্ষ্য করেই গুলি চালানো হয়। দুই বন্দুকধারী এই হামলা চালিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি রয়েছে। সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করতে অভিযান শুরু করেছে তারা।
জম্মু-কাশ্মীরের নবনির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী ওমর আব্দুল্লাহ শ্রমিকদের ওপর নৃশংস এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, শ্রমিকরা এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্মাণ কাজ করছিল। যে হামলা হয়েছে তাতে শ্রমিকদের বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। এমন নৃশংস হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তিনি । জানিয়েছেন নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা।
এখনও পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে যারাই এই হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দ্রুত কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা। তিনি বলেছেন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। জনগণকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে, এমন ঘৃণ্য কাজের পেছনে যারাই থাকুক তাদের উপযুক্ত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নিতীন গড়করী এমন ‘ভয়াবহ’ সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তার এক্সের এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, নিরীহ শ্রমিকরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে নিয়োজিত ছিলেন। নিতীন গড়করী বলেন, আমি এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
নিরাপরাধ নাগরিকদের হত্যা এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে সহিংসতা ও সন্ত্রাস ছড়ানোর মতো কাজ মানবতাবিরোধী অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেছেন, গোটা দেশ এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ।
গত শুক্রবার কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলের শোপিয়ান জেলায় গুলিবিদ্ধ এক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই শ্রমিকের সাথে কাজ করা অন্য এক শ্রমিক পুলিশকে জানায়, ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করার সময় একটি ফোন কল আসে। কলটি ছিল নিহত ওই শ্রমিকের। তিনি জানিয়েছিলেন যে, তিনি কোথাও যাচ্ছেন। পরে দীর্ঘ সময় পরেও তিনি ফিরে না এলে তাকে খুঁজতে যায় অন্য শ্রমিকরা। তার নাম্বারে কল দেয়া হয়, কিন্তু কেউ কল রিসিভ করছিলনা বলে জানিয়েছেন ওই শ্রমিক। পরে আমরা তার মৃতদেহ খুঁজে পাই।
সম্প্রতি সময়ের মধ্যে জম্মু-কাশ্মীরের গতকালের ওই হামলা ছিল সবচেয়ে মারাত্মক। কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলটিতে নতুন সরকার শপথ নেয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই ঘটল এই ঘটনা।