বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) ৮৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
রোববার (১৯ জানুয়ারি) জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একগুচ্ছ কর্মসূচি ঘোষণা করবে তার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- প্রথম প্রহরে রাত ১২টায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হয়।
সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপি নেতারা শেরে বাংলা নগরের শহীদ জিয়ার কবরে দোয়া ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
এ ছাড়া বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বাগবাড়িতে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ। এই কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
পরদিন ২০ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মৌলভীবাজারের সদর থানার ৬নং একাটুনা ইউনিয়নে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে। এ ছাড়াও দিবসটি উপলক্ষে দেশব্যাপী সব জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায়ে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল, শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র ও দুস্থদের মাঝে খাদ্য বিতরণের কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি।
দিনটি উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ দর্শনের প্রবক্তা ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ক শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের ৮৯তম জন্মবার্ষিকীতে তার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। জীবদ্দশায় দেশের সব ক্রান্তিকাল উত্তরণে শহীদ জিয়া ছিলেন জাতির দিশারি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের জনগণের ওপর আক্রমণ করার পর তিনি সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেন অসীম বীরত্বে। সেদিন থেকেই দেশবাসী তার অসাধারণ নেতৃত্বের পরিচয় পায়। স্বাধীনতাত্তোর দুঃসহ স্বৈরাচারী দুঃশাসনে চরম হতাশায় দেশ যখন নিপতিত, জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়া যখন বাধাগ্রস্ত হয় ঠিক সেই সংকটের এক পর্যায়ে জিয়াউর রহমান জনগণের নেতৃত্বভার গ্রহণ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা প্রতিশ্রুতির অপরাজনীতি দ্বারা জনগণকে প্রতারিত করে স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীন মহল যখন মানুষের বাক-ব্যক্তি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করে গণতন্ত্রকে মাটিচাপা দিয়েছিল, দেশকে ঠেলে দিয়েছিলো দুর্ভিক্ষের এক সীমাহীন নৈরাজ্যের মধ্যে। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আন্তর্জাতিক খেতাবপ্রাপ্ত হতে হয়, জাতির এরকম এক মহা-সংকটকালে ৭ নভেম্বর সৈনিক জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবে শহীদ জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতার হাল ধরেন। একজন সৈনিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও তার জীবনের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দেশের সব সংকটে তিনি ত্রাণকর্তা হিসেবে বারবার অবতীর্ণ হয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ক্ষমতায় এসেই তিনি বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি শুরু করেছিলেন উৎপাদনের রাজনীতি, দেশকে স্বনির্ভর করে গড়ে তুলতে তিনি কৃষি বিপ্লব, গণশিক্ষা বিপ্লব ও শিল্প উৎপাদনে বিপ্লব, সেচ ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে স্বেচ্ছাশ্রম ও সরকারি সহায়তার সমন্বয় ঘটিয়ে ১৪০০ খাল খনন ও পুনঃখনন করেন। অসাধারণ দেশপ্রেমিক অসম সাহসিকতা, সততা-নিষ্ঠা ও সহজ-সরল ব্যক্তিত্বের প্রতীক জিয়াউর রহমানের অবদান দেশের জন্য অসামান্য।
উল্লেখ্য, জিয়াউর রহমানের ডাকনাম ছিল কমল। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন।