জিলহজ মাস শুরুর আগে যে আমলের প্রস্তুতি নেবেন

জিলহজ মাসের চাঁদ ওঠার পর এই দশ দিন কোরবানি আদায় করা পর্যন্ত শরীরের কোনো প্রকার চুল-পশম ও নখ না কাটা মুস্তাহাব। এই আমলটি অনেকেই করে থাকেন।

এ বিষয়ে বর্ণিত সকল হাদিস এবং সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়িদের আমল থেকে প্রতীয়মান হয় যে, যারা কোরবানি করবেন এবং যারা সামর্থ্যের অভাবে কোরবানি করবেন না— সবার জন্যই এই আমল করা উত্তম।

তবে যে ব্যক্তি কোরবানি করবে, তার জন্য এ আমলটি তুলনামূলক অত্যাধিক গুরুত্ব রাখে। আল্লাহর নবী সা. বলেন—
‘যখন তোমরা জিলহজের চাঁদ দেখতে পাও এবং তোমাদের কেউ কোরবানি করতে চায়, সে যেন— তার চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে। (মুসলিম, হাদিস : ১৯৭৭)

অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তিকে বললেন— আমাকে কোরবানির দিন ঈদ পালনের আদেশ করা হয়েছে, যা আল্লাহ এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন। লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানিহা থাকে (অর্থাৎ অন্যের থেকে নেওয়া দুগ্ধ দানকারী উটনী) আমি কি তা দিয়ে কোরবানি করব? নবীজি (সা.) বললেন- না, তবে তুমি নখ, চুল ও মোঁচ কাটবে এবং নাভির নীচের পশম পরিস্কার করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কোরবানি বলে গণ্য হবে। (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৭৭৩, ৫৯১৪)

সাহবায়ে কেরাম ও তাবেয়িরাও এ দিনগুলোতে শিশুদের চুল-নখ কাটা অপছন্দ করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) এক নারীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। ওই নারী জিলহজের দশকে ছেলের চুল কেটে দিচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেন, সে যদি কোরবানির দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করত— অনেক ভালো হতো। (মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস : ৭৫৯৫)

মূলত এ বিধানটি হাজিদের কর্মের সাথে সাদৃশ্যায়নের হিকমত হিসেবে মুস্তাহাব আমল। হাজিরা যেমন হজের সময় চুল নখ ইত্যাদি কর্তন করে না। বরং দশ জিলহজ কোরবানি শেষ করে তারপর চুল নখ ইত্যাদি কর্তন করে থাকে।

তেমনি যারা হজে যাননি। তারাও হাজিদের সাদৃশ্যায়নে জিলহজ মাসের প্রথম দশকের সূচনালগ্ন থেকে এমন আমল করে থাকেন।

হাদিসে এ বিষয়ে কবুল কোরবানির সওয়াব পাওয়ার সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। সেই হিসেবে ঈদের দিন কোরবানি শেষ করার পরই চুল নখ কাটবে। আগে কাটলে সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে।