দেশের শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। অবশ্য লেনদেন সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার বেশি হয়েছে।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এখনো পর্যন্ত লেনদেন হওয়া ছয় কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক বাড়লো। তবে ডিএসইতের মতো সিএসইতেও লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
আরও পড়ুনঃ ডিএসইতে আট মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলে। লেনদেনের শেষপর্যন্ত অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় উত্থান দিয়েই দিনের লেনদেন শেষে হয়।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়লেও সাতটি প্রতিষ্ঠান বড় ধনের দাপট দেখিয়েছে। এ সাত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- রহিম টেক্সটাইল, দেশ গার্মেন্টস, জেমিনি সিফুড, ফরচুন সুজ, এনার্জি প্যাক পাওয়ার জেনারেশন, সার্প ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ন্যাশনাল ব্যাংক। এই সাত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে। এমনকি লেনদেনের বেশিরভাগ সময় দিনের সর্বোচ্চ দামে এ সাত প্রতিষ্ঠানের বিপুল শেয়ারের ক্রয় আদেশ এলেও বিক্রয় আদেশের ঘরশূন্য পড়ে থাকে।
এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দাপট দেখানোর দিনে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৮টির। আর ৭০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০১টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৭৬টির দাম কমেছে এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩৭টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৩৬টির দাম কমেছে এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৫৮টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬টির এবং ২৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৮টির দাম কমেছে এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১০০ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। বাজারটিতে ৬৭৯ কোটি ২ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৯০ কোটি ৬২ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এটি চলতি বছরের এখনো পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন। গতকাল ডিএসইতে চলতি বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন হয়।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ২১ কোটি ২৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার নদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লাফার্জাহোলসিম।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, লাভেলো আইসক্রিম, মাগুরা কমপ্লেক্স, মিডল্যান্ড ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, অগ্নি সিস্টেম এবং ফাইন ফুডস।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ১১৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৭টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ।