#নীতিমালা ২০২৫-এর খসড়া নিয়ে আলোচনায় শিল্প সচিব
ট্রেড লাইসেন্স সহজীকরণসহ এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করবে সরকার। এসএমই নীতিমালা ২০২৫-এর খসড়া নিয়ে রাজশাহীতে এসএমই ফাউন্ডেশন এবং আইএলও বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত বিভাগীয় সংলাপে এই আশ্বাস দিয়ে শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান আরো বলেন, এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য এসএমই ফাউন্ডেশন রাজশাহীতে ডিসপ্লে সেন্টার তৈরির উদ্যোগ সহায়তা করবে শিল্প মন্ত্রণালয়। ১৭ মে ২০২৫ এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আয়োজিত সংলাপে বক্তব্য প্রদান করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রশিদুল হাসান, এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী ও উপব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম হাসান সাত্তার, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি এবং জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এবং আইএলও বাংলাদেশের হেড অব প্রোগ্রাম গুঞ্জন ডালাকোটি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, এসএমই ফাউন্ডেশন দেশের ৬৪ জেলায় প্রায় দুই লাখ সিএমএসএমই উদ্যোক্তাকে সরাসরি সেবা দেয়ার পাশাপাশি ১১ হাজারের বেশি উদ্যোক্তাকে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ করেছে। আমাদের বিশ্বাস, এসএমই নীতিমালা ২০২৫ বাস্তবায়িত হলে দেশের লাখো সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তা উপকৃত হবেন এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন। তিনি আরো বলেন, এসএমই খাত দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড। এই খাতকে সহায়তা করলে সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতিও।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, খসড়া এসএমই নীতিমালা ২০২৫-এর ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে এসএমই ফাউন্ডেশন ও আইএলও বাংলাদেশের উদ্যোগে অংশীজনদের সাথে পরামর্শ সভা থেকে পাওয়া সুপারিশসমূহ শিগগিরই শিল্প মন্ত্রণালয়ে পৌঁছে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, এসএমই নীতিমালা ২০১৯-এর মেয়াদ এসএমই ফাউন্ডেশনের সহায়তায় শিল্প মন্ত্রণালয় এসএমই নীতিমালা ২০২৫-এর খসড়া প্রস্তুত করে অংশীজনের মতামতের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩২% শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র ২০১৩ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা বলছে, দেশে ৭৮ লাখের বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই) শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা মোট শিল্প প্রতিষ্ঠানের ৯৯%-এর বেশি। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫% এসএমই খাতে। এই খাতে প্রায় আড়াই কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে। অধিক জনসংখ্যা এবং সীমিত সম্পদের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখছে। এমএসএমই একটি শ্রমনিবিড় ও স্বল্প পুঁজিনির্ভর খাত। উৎপাদন সময়কাল স্বল্প হওয়ায় জাতীয় আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এমএসএমই অবদান অনেক। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো বাংলাদেশেও সিএমএসএমই খাতের বিকাশ ও উন্নয়নের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। বস্তুত বাংলাদেশকে শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির দেশে পরিণত করার ক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন অনুঘটকের ভূমিকা রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে এসএমই খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এসএমই ফাউন্ডেশন সরকারের জাতীয় শিল্পনীতি ২০২২ এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এবং এসডিজি ২০৩০ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা এসএমই ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগী প্রায় ২০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা, যাদের ৬০% ই নারী-উদ্যোক্তা।