ঢাকায় এসিসির সভা নির্ভর করছে আফগানিস্তানের ওপর

এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আয়োজক হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) শুরুতে এটিকে কেবল আনুষ্ঠানিক আয়োজন হিসেবেই দেখছিল। বিসিবির অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল জানিয়ে দিয়েছেন, অতিথিদের নৈশভোজ এবং সভাস্থলের ব্যবস্থা করা ছাড়া বিসিবির এতে কোনো ভূমিকা নেই। তবে বাস্তবতা ভিন্ন। এসিসির গুরুত্বপূর্ণ এ সভা ঘিরে দক্ষিণ এশিয়ার ক্রিকেটে জটিল কূটনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যার কেন্দ্রে বাংলাদেশ।

ক্রিকেটের প্রভাবশালী দেশ ভারত এবং শ্রীলঙ্কা মনে করছে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রেখে বিসিবি যেন এসিসিতে একটি পক্ষ নিচ্ছে। বিসিবির কর্মকর্তার অনেকেই শঙ্কায় রয়েছেন—এই অবস্থান ভারতের অসন্তোষ ডেকে আনতে পারে, যার কূটনৈতিক মূল্য বিসিবিকে দিতে হতে পারে।

এর মধ্যে এসিসির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এজিএম আয়োজন করতে হলে টেস্ট খেলুড়ে পাঁচ দেশের মধ্যে অন্তত তিনটি এবং সহযোগী ১০টি সদস্য দেশের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হয়। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান সভা বয়কটের ঘোষণা দেওয়ায় কোরাম পূরণে সংকট তৈরি হয়। কোরাম পূরণে পিসিবির সঙ্গে মিলে আফগানিস্তানকে অংশগ্রহণে রাজি করানোর চেষ্টা করে বিসিবি। মৌখিকভাবে আফগানিস্তান সভায় যোগ দিতে সম্মতি দিয়েছে বলে জানা গেছে। আজকের (বুধবার) মধ্যেই তাদের চূড়ান্ত অবস্থান জানা যাবে।

এসিসির সভাপতি ও পিসিবি চেয়ারম্যান আশরাফ নাকভিকে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছেন বিসিবি সভাপতি বুলবুল। কর্মকর্তাদের মতে, বিভাজন স্পষ্ট হওয়ার পরও সম্মান রক্ষার্থে নাকভিকে না বলতে পারেননি তিনি। তবে এই সিদ্ধান্ত বিসিবিকে দীর্ঘমেয়াদে কূটনৈতিকভাবে ভুগাতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

সভায় অংশ নিতে এশিয়ার ২৭টি সদস্য দেশের মধ্যে অন্তত ১৯টি দেশ সম্মতি জানিয়েছে বলে বিসিবি সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু দেশের প্রতিনিধি ঢাকায় পৌঁছেছেন। পিসিবির প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা (সিওও) সালমান নাসিম মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ঢাকায় এসেছেন, আজ (বুধবার) যোগ দেবেন পিসিবি চেয়ারম্যান নাকভি। বাহরাইন, ভুটান, ব্রুনাই, চীন, চাইনিজ তাইপে, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপ, কুয়েত, মিয়ানমার, কাতার, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, তাজিকিস্তান, ইরান, জাপান ও ইন্দোনেশিয়ার প্রতিনিধিদের জন্য অন অ্যারাইভাল ভিসার অনুমোদন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

তবে সহযোগী দেশগুলোর মধ্যে নেপাল, ওমান, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, হংকং এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধি অনুপস্থিত থাকতে পারেন।

এসিসির ইতিহাসে এজিএম নিয়ে এত বড় বিভাজন আগে কখনও দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিসিবির কর্মকর্তারাও স্বীকার করছেন, এরকম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আগে কখনও পড়তে হয়নি তাদের।

এধরনের খবর পড়তে ভিজিট করুন সোনালি বাংলা নিউজ